এযাবৎকালের সর্বোচ্চ পৃষ্ঠপোষকতা পেল রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রেজল্যুশন- জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:০৮ |  আপডেট  : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:৫৬

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক রেজল্যুশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। বুধবার (১৫ নভেম্বর) রেজল্যুশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এবারের রেজল্যুশনটিতে ১১৪টি দেশ সহপৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে, যা এযাবৎকালে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী প্রতিনিধির অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে এসেছে এ বছরের রেজল্যুশনে। ১ দশমিক ২ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদারতা এবং মানবিক সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে এতে।

ভাসানচর প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়েছে। মিয়ানমারের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে, এটি রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলো উদঘাটন করতে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এটি নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি গৃহীত ২৬৬৯ রেজল্যুশনকে স্বাগত জানায়, যাতে পরিষদের সদস্যরা মিয়ানমারে সব ধরনের সহিংসতার অবিলম্বে অবসানের দাবি জানায়। এতে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তজার্তিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সর্বোপরি, রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং নীতির আওতায় যাতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখে, সে বিষয়ে জোরালো আহ্বান জানানো হয়েছে এবারের রেজল্যুশনে।

রেজল্যুশনটি গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ, যেখানে জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব ও খুব সীমিত সম্পদ রয়েছে। আমাদের ভূখণ্ডে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কোনও সুযোগ নেই। তাদের অবশ্যই তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য মিয়ানমার সরকারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি এ ব্যাপারে আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের পূর্ব পর্যন্ত, তিনি অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, বাংলাদেশে অস্থায়ী ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

চলমান বিভিন্ন বৈশ্বিক সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে, রেজল্যুশনটিতে জাতিসংঘের অসংখ্য সদস্য রাষ্ট্রের সহপৃষ্ঠপোষকতা এক অনন্য সফলতার ইঙ্গিত বহন করে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এটা বিশ্বব্যাপী সংহতির একটি শক্তিশালী সংকেত বাহক।

জাতিসংঘের আলোচ্য সূচিতে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে জীবন্ত এবং গুরুত্ববহ করে রাখার জন্য বাংলাদেশ ওআইসি এবং ইইউকে তাদের নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত