একজন লোকের স্বৈরাচার থেকে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়না- পঞ্চগড়ে সলিমুল্লাহ খান
প্রকাশ: ২ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:০৩ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৫০
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন একজন লোকের স্বৈরাচার থেকে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়না। তাহলে এটাকে আপনি বলতেন নেহায়েত স্বৈরাচার। ব্যাপ্টোটিজম। মানুষকে মুখোরোচক কথা বলে এক নেতা একদেশ, ওমুককে জাতির জনক এ সমস্ত কথা বলে মানুষকে আকৃষ্ট করে তাদের কে আলোচনার উর্দ্ধে রেখে সমস্ত অপকর্ম লাইসেন্স দেয়াকেই বলা হয় ফ্যাসিবাদ। আজ যদি ছাত্র ছাত্রীরা না জাগতো ২০২৪ সালের আর পরিবর্তন হতোনা । হয়তো আমারও পঞ্চগড় আসতে আরও বিলম্বিত হতো। অনেকে বলে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের কি রাজনীতি করা কি সঠিক ? আমার মতে রাজনীতি আমাদের সবাইকে করা উচিত। আমাদের দেশে যারা বিশেষজ্ঞ হবেন বর্তমান যুগ বিশেষজ্ঞদের যুগ কিন্তু যারা বিশেষজ্ঞ হবেন তারা দেশের ইতিহাস জানবেননা তিনি কি করে বিশেষজ্ঞ হবেন ? বিজ্ঞানকেও প্রশ্নের মুখোমুখি করা উচিত। আমাদের দেশে যেভাবে বিজ্ঞান শেখানো হয় তার একটা বড় ত্রুটি হলো বিজ্ঞানের ইতিহাসটা শেখানো হয়না। যারা এটম বোমা বানায় তারাও বিজ্ঞানী, যারা ক্যামিকেল দিয়ে মানুষ হত্যা করছে তারাও বিজ্ঞানী, যারা ভেজাল ওষুধ বানাচ্ছে তারাও বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জড়িত। বিজ্ঞানের সাথে ভাবাদর্শ জড়িত। তাই বিজ্ঞানের ইতিহাস না পড়ে অন্ধের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়ার মতো। এখন বিজ্ঞান হয়ে গেছে দুবৃত্তের শেষ আশ্রয় স্থল গনতন্ত্রের মতো । পঞ্চগড়ের প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংগঠন কারিগরের আয়োজনে সলিমুল্লাহ খানের একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার সকালে সরকারি অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সাঈদ। এসময় তিনি আরও বলেন শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের দেশে ইংরেজী শিখতে ২০/২১ বছর লেগে যায়। এর কারণ ইংরেজী শেখানোর ভালো শিক্ষক নেই। অথচ ৩ বছরেই ইংরেজী শিখে ফেলার কথা। প্রার্থমিক শিক্ষাকে কমপক্ষে ১২ বছর করা উচিত। পৃথিবীর সব দেশের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি প্রার্থমিক শিক্ষার বয়স ১২ বছর। সবার জন্য মানবিক শিক্ষা থাকবে, নীতিগত শিক্ষা থাকবে, ধর্মীয় শিক্ষাও থাকবে। সকল মানুষের নিজের ভাষা শেখার অধিকার আছে। বাংলাদেশ কে অনেকে গরিবের দেশ বলে আসলে এটার পরিচালনা ব্যবস্থা গরিব। বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এক করতে হবে। যদি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংস্কার না হয় তা হলে শিক্ষা ক্ষেত্রেও হবেনা। বৈষ্যম্যের গোড়াটাকে আলোচনায় আনতে হবে। ছাত্র ছাত্রীরা প্রতিবাদ করেছে তাৎক্ষনিক বৈষম্যোর বিরুদ্ধে। আমাদের বৈষম্যের মুল স্থানগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। কারিগরের নির্বাহী পরিচালক সরকার হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ^ বিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, বগুড়া পল্লি উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক ড. শেখ মেহদী মোহাম্মদ, পরিবেশ ও নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, ইউনিভার্সিটি অফ অটোয়া কানাডার পিএইচডি ফেলো আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে অতিথিদের হাতে ক্রেষ্ট ও পঞ্চগড়ে উৎপাদিত চা পাতা তুলে দেয়া হয়। এসময় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও পঞ্চগড়ের সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত