ধান-চাল সংগ্রহ সময় পেছানোর দাবী-

আদমদীঘিতে ধান কাটা শ্রমিক সংকটে দিশেহারা কৃষক 

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ১০ মে ২০২২, ১৯:০৮ |  আপডেট  : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৩২

ইরি-বোরো ধান পাকার সময়টাতে আবহাওয়া বিরুপ থাকা তথা ঘন ঘন বৃষ্টির কারনে এবার বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ইরি-বোরো ধান পাকতে দেরি হয়েছে। বিগত বছর গুলোতে যে সময়টাতে ধান পাকত এবং কাটা-মাড়াই শুরু হতো এবার তা প্রায় ২০/২৫ দিন পিছিয়ে গেছে। পাশাপাশি যে অঞ্চল থেকে শ্রমিক আসত সেখানেও প্রায় একই সময়ে আগাম জাতের ধান পেকে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। 

জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলা সহ আশপাশ এলাকায় ইরি-বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে আসেন পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার শ্রমিকরা। তারা চৈত্রের শেষ থেকে বৈশাখের শুরুতে আসতে থাকে। ১৫/২০ দিনেই ধানকাটা ও মাড়াই শেষ করে ফিরে যেত নিজ নিজ জেলায় ধান কাটা মাড়াই করতে। কিন্তু এবার আদমদীঘি উপজেলায় ধান পাকার সময় ঘন ঘন বৃষ্টি হবার কারনে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে গ্রামের পর গ্রাম দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটে কৃষকরা ধান কাটাতে পারছেনা। ফলে তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উত্তরের ওই সব জেলা থেকে ধান কাটা শ্রমিকরা আসেন ট্রেনে করে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশন স্টেশনে। ফলে সান্তাহার স্টেশন এখন আদমদীঘি সহ আশপাশের পাঁচ উপজেলার কৃষকদের আবাসস্থলে পরিনত হয়েছে। ধান কাটা শ্রমিক সংগ্রহ করতে ঈদের পর থেকে রাত-দিন অবস্থান করতে দেখা যাচ্ছে স্টেশনে। উত্তর দিক থেকে সান্তাহার স্টেশনে ট্রেন প্রবেশের ঘন্টা দেওয়ার সাথে সাথে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কৃষকরা। চলছে ধাক্কাধাক্কি, উত্তপ্ত বাক-বিতন্ডা এবং প্রায়ই হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে শ্রমিক সংগ্রহ করতে আসা কৃষকদের মধ্যে। এতে শ্রমিকরা বিভ্রান্ত হয়ে সটকে পড়ছে স্টেশনের বাহিরে। কিন্তু সেখানেও পড়ছে একই বিরম্বনার মুখে। 

একদিকে শ্রমিক সংকট অন্য দিকে শ্রমিকের মুল্য বৃদ্ধির কারনে কৃষকদের হয়েছে মড়ণদশা। ঝড়, ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিতে অন্তত ৯০ ভাগ জমির ধান গাছ জমিতে ন্যুয়ে পড়েছে। বহু সংখ্যক জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ভ্যাপসা গরমে ধান গাছে পচন ধরেছে এবং শীষেই চারা গজিয়ে গেছে। এতে করে ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কৃষকরা। এদিকে, ইরি-বোরো ধান কাটা মাড়াই বিলম্ব হবার কারনে খাদ্য বিভাগ এখনো এক ছটাক ধান-চাল ক্রয় করতে পারেনি। একারনে খাদ্য বিভাগের সাথে নিবন্ধিত মিল মালিকগণ সংগ্রহ সময় পেছানোর জন্য খাদ্য বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন।  

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরে কথা হয় আদমদীঘির মোত্তাকিন অটোরাইস মিল মালিক  মোত্তাকিন তালুকদার মুক্তার সাথে। তিনি বলেন, এবার বরাদ্দ পেয়েছি সাড়ে চার শ’ মেট্টিক টন চাল। এপরিমান চাল সরকারি গুদামে দিতে প্রয়োজন প্রায় সাত শ’ মেট্টিক টন (২০ হাজার মন) ধান। অথচ, এখনো কাটা মাড়াই শুরুই হয়নি। তাহলে সরকার নির্ধারিত সময়ে চাল সরবরাহ করব কি ভাবে। সে কারনে সংগ্রহ সময় বাড়ানো প্রয়োজন। একই ধরনের অভিমত জানান, সান্তাহারের বড় ধরনের হাস্কিং চালকল মালিক মতিউর রহমান স্বপন সহ বেশ কিছু চালকল মালিক। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত