আদমদীঘিতে করোনার থাবায় পোনা মাছ বাজারের দুরাবস্থা, বেকার ৫ শতাধিক চাষী

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২১, ১৯:২৪ |  আপডেট  : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:৫৪

কোভিড-১৯ করোনা মহামারীর থাবায় ও দেশ ব্যাপী গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার মৎস্য চাষী ও ব্যবসায়ীদের এখন দুরাবস্থা। এই ব্যবসার সাথে জড়িত প্রায় ৫শতাধিক ব্যবসায়ী এখন বেকার হয়ে পড়েছে। আদমদীঘি উপজেলা সদরের পাবলিক লাইব্রেরী সংলগ্ন ৫৭শতক জায়গায় ১৯৯০সালে এই এলাকার কিছু শিক্ষিত বেকার যুবকরা ¶ুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি গঠন করে একটি পোনা বাজার প্রতিষ্ঠা করে। হাঁটিহাঁটি পা পা করে বাজারটি এক পর্যায়ে বৃহৎ আকারে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত এই পোনা বাজারে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকার পোনা বেচাকেনা হতো। উপজেলার সকল চাষীদের পুকুরে ব্যাপক পরিমাণ রেণু পোনা উৎপাদন হলেও করোনা মহামারীর থাবায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা না আসায় চাষী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে এবং এসব চাষীরা মানবেতন জীবন যাপন করছে।  এতে করে এই বাজারে পোনা মাছ আমদানী নেই বললেই চলে। তাছাড়া ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির প্রায় ৫শতাধিক ব্যবসায়ী ও চাষী বেকার হয়ে পড়েছে। 

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ৯০টি হ্যাচারী রয়েছে। এসব হ্যাচারী গুলোতে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভারকার্প, গ্রাসকার্প, ব্লাককার্প, বিগহেড, থাইসরপুটি, সরপুটি, জাপানি, মিররকার্প, মনোসে· তেলাপিয়া, তারাবাইন, মাগুর, বিগহেড মাগুর, কৈ, দেশি বিদেশি শিং, পাঙ্গাস, চিতল, আঁইড়, গোলসা, ট্যাংরা, পাবদা ইত্যাদি দেশি ও বিদেশী মাছের রেণু পোনা উৎপাদন হয়। এসব উৎপাদিত রেনু পোনা মাছ এই বাজারেই বিক্রি হয়ে থাকে। এই পোনা মাছ বাজার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে পোনা মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়। 

আদমদীঘি ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশে করোনা মহামারীর প্রার্দুভাব দেখা দেয়ার পর থেকে রেণু পোনা উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতি হতে শুরু করেছে। এছাড়াও করোনার কারনে বাহির থেকে পাইকাররা পোনা মাছ ক্রয় করতে আসছে না। ইতিপূর্বে এই বাজারে গড়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকার পোনা মাছ কেনাবেচা হতো, কোভিড-১৯ করোনা মহামারীর কারনে বর্তমানে ১ লাখ টাকার পোনা মাছও কেনাবেচা হচ্ছে না। এতে করে পোনা ব্যবসায়ীরা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুরাবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তিনি আরোও জানান, সরকার করোনা মহামারীর কারণে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রণোদনা দিলেও ক্ষুদ্র মৎস্য চাষীরা বি ত হচ্ছেন। সরকারি ভাবে সহজশর্তে ক্ষুদ্র চাষীদের প্রণোদনা দিলে এ অ লের মৎস্য চাষীরা উপকৃত হবে।   

আদমদীঘি উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার সুজয় পাল জানান,দেশব্যাপী করোনার কারণে পোনা উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাছাড়া মাঝে মধ্যে লকডাউন ও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা না আসায় পোনা বাজারের এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত