অবশেষে নিভেছে খাজা টাওয়ারের আগুন, ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকবে ১ সপ্তাহ
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩৭ | আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩
অবশেষে নিভেছে রাজধানীর মহাখালীর আমতলী এলাকায় অবস্থিত খাজা টাওয়ারের আগুন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই ভবন থেকে ৯ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আগুন থেকে বাঁচতে বের হওয়ার চেষ্টা করার সময় ওপর থেকে পড়ে মারা গেছেন এক নারী। এছাড়া ভবনের ভেতর আটকে পড়া আরেক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস জানতে পারে বিকাল ৪টা ৫৮ মিনিটে। ৫টা ১০ মিনিটের মধ্যেই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের সহায়তায় যোগ দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীও। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার পর রাত পৌনে ১২টা নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ভবনটিতে আগুন লাগার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে ঝুলন্ত তার ধরে নামতে গিয়ে পড়ে মারা গেছেন হাসনা হেনা (২৭) নামের এক নারী। তিনি অরবিট নামের একটি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিপণন বিভাগে কাজ করতেন। এছাড়া রাত সাড়ে ১২টার দিকে খাজা টাওয়ারের রেস অনলাইন লিমিটেডের কর্মী আকলিমা রহমানের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
এদিকে খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার ঘটনায় সেখানে অবস্থিত ডাটা সেন্টার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুড়ে গেছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি)। এতে সারাদেশের অন্তত ছয়শ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সেবা। যেগুলো এখনও চালু আছে, সেখানেও ইন্টারনেটে ধীরগতি।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘যতটুকু খবর পেয়েছি লেভেল থ্রি, ম্যাক্স হাব, আমরা নেটওয়ার্কস, আর্থনেট ও উইনস্ট্রিম আইআইজি পুড়ে গেছে। ফলে আমরা এরইমধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ হারিয়েছি। সারাদেশের ৫৫০-৬০০ আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধের পর্যায়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ধারণা অনুযায়ী—যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তাতে ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে। আর যদি ডিভাইসগুলো পুড়ে যায়, সেক্ষেত্রে আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে। তার আগ পর্যন্ত সারাদেশে ইন্টারনেট ধীরগতির থাকতে পারে।’
এছাড়া মহাখালীর খাজা টাওয়ারে ইন্টারকানেক্ট এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) রয়েছে। ফলে দেশের সব মোবাইল অপারেটরদের সংযোগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন না। বিশেষ করে এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে কল দিতে গেলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একাধিকবার ডায়াল করার পর কল ঢুকছে।
ভবনের ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করা হয়নি
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেছেন, খাজা টাওয়ার ভবনটিতে সেফটি প্ল্যান ছিল না। ভবনটিতে দাহ্য পদার্থ বেশি ছিল, সে কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এই ভবনে ব্যাটারি, বিভিন্নরকম ক্যাবল, ইনসুলেশন ফোম এবং বোর্ডের তৈরি ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন থাকায় আগুন ছড়িয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে, তবে সম্পূর্ণ নির্বাপণ করতে সময় লাগবে। আপাতত মনে হচ্ছে কোনো বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।
ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত