চলে গেলেন কিংবদন্তি কত্থক নৃত্যশিল্পী বিরজু মহারাজ
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১১:১১ | আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৬
কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দিল্লিতে মৃত্যু হয় কত্থক নাচের এই সাধকের। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। খবর সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের।
বিরজু মহারাহের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার রাতে দিল্লির বাড়িতে নাতির সঙ্গে খেলছিলেন তিনি। সেই সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত দিল্লির সাকেত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বেশ কিছুদিন ধরেই কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন পণ্ডিত বিরজু মহারাজ।
কালকা-বিনন্দাদিন ঘরাণার শিল্পী ছিলেন বিরজু মহারাজ। তাঁর জন্ম ১৯৩৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি লখনউয়ের এক নামী কত্থক নৃত্যশিল্পীদের পরিবারে। জন্মসূত্রে তার নাম ছিল ব্রিজমোহন নাথ মিশ্র। ছোট থেকেই নাচ-গানের পরিবেশে বেড়ে ওঠা তার। বিরজু মহারাজের গুরু ছিলেন তার বাবা অচ্ছন মহারাজ। খুব ছোট বয়সেই বাবার কাছে কত্থক নাচের তালিম শুরু তার। এর পাশাপাশি কাকা শম্ভু মহারাজ এবং লাচ্চু মহারাজ বরাবর অনুপ্রাণিত করেছিলেন বিরজু মহারাজকে।
শিশুশিল্পী হিসেবেই বাবার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতেন তিনি। কৈশোরে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ‘গুরু’ তকমা জুড়ে গিয়েছিল তার নামের আগে। রামপুরের নবাবের দরবারে নৃত্য পরিবেশন করতে বিরজু মহারাজ। মাত্র ২৮ বছর বয়সে সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার জেতেন বিরজু মহারাজ। নাচই ছিল তার প্রথম ভালোবাসা তবে শাস্ত্রীয় সংগীতের ওপরও চমৎকার দখল ছিল।
১৯৮৩ সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মবিভূষণ পান বিরজু মহারাজ। পেয়েছেন কালীদাস সম্মানও। এই কত্থক গুরু বেশ কিছু ছবিতে কোরিওগ্রাফির দায়িত্বভার সামলেছেন। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে। নতুন শতাব্দীতে ‘দেবদাস’, ‘বাজিরাও মস্তানি’-র মতো ছবিতে বিরজু মহারাজের কোরিওগ্রাফি মুগ্ধ করেছে অপামর ভারতীয়কে। ‘বিশ্বরূপম’ ছবিতে কোরিওগ্রাফির জন্য চলচ্চিত্রে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন বিরজু মহারাজ।
পণ্ডিত বিরজু মহারাজ একজন দক্ষ গল্পকার। তাঁর অভিব্যক্তি থেকে চোখ ফেরানো ছিল দায়। জীবনের ঘটনার সঙ্গে তিনি মিশিয়ে দিতেন নাচ। এইভাবেই কত্থক নৃত্যে এক অন্য মাত্রা যোগ করেছিলেন তিনি, সেখানেই অনন্য বিরজু মহারাজ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত