৫ দফা দাবিতে জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:২১ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৪, ২২:২২

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত মোস্তাফিজুর রহমানসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় নিপীড়নে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান ও নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া সংলগ্ন অমর একুশে ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’ ব্যানারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, সিন্ডিকেটের জরুরি মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হবে। সেই সিন্ডিকেটকে অকার্যকর করা হয়েছে। উপাচার্য আগেও নির্বিকার ছিলেন এখনো আছেন, হয়ত ভবিষ্যতেও নির্বিকার থাকার পাঁয়তারা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর সর্বোচ্চ বডি সিন্ডিকেটকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপাচার্য কীভাবে নির্বিকার বসে থাকতে পারেন? বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। কারণ ধর্ষকরা জানত এই ক্যাম্পাসে একজন নিপীড়ক শিক্ষক বহাল তবিয়তে রয়েছেন। প্রশাসন তার সঙ্গে আছে। সুতরাং তারই ছোট ভাইয়েরা ধর্ষণের মতো কাজ করার সাহস পাচ্ছে। সুতরাং এই ধর্ষকদের মূলোৎপাটন করার জন্য আগে ওই নিপীড়ক শিক্ষককে বিতাড়িত করতে হবে।

প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, র‍্যাব বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ধর্ষণকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না। আমরা সবাই দলমত নির্বিশেষে উপলব্ধি করছি কিন্তু উপাচার্য উপলব্ধি করতে পারছেন না যে দায় ব্যর্থতা তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, মাদকের বিস্তার হয়েছে এই দায় প্রশাসনের। প্রক্টর ও প্রভোস্ট তার দায়িত্ব পালন করেনি। তাদের যদি ব্যক্তিগত লজ্জাবোধ থাকত তাহলে পদত্যাগ করত। সিন্ডিকেটে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার একটিও বাস্তবায়িত হয়নি। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষে অব্যাহতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ পরিবেশ নেই। এই পরিবেশ আগে নিশ্চিত করতে হবে।

নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং র‍্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে হবে; নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে, জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত