১১ দিনে ৩৩ লাখ টিকা নিবন্ধন!
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২১, ২০:৪২ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২০
নতুন শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যায় প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সবার মধ্যে টিকা নিতে আগ্রহ দেখা গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এরই ধারাবাহিকতায় টিকা নিবন্ধনে বেশ সাড়া পেড়েছে। অবশ্য বিভিন্ন উৎস থেকে দেশে প্রতিদিনই টিকা আসার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সূত্র মতে, দুই মাস বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের টিকা নিবন্ধনের শুরুতে প্রথম ১১ দিনে ৩৩ লাখের কিছু বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন। দেশে গত ২৬ জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়। পরে হঠাৎ টিকা অপ্রতুল হওয়ায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নিবন্ধন বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই সময় পর্যন্ত প্রায় ৭৩ লাখ মানুষ টিকা নিতে নিবন্ধন করেন।
শনিবার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত নিবন্ধন সংখ্যা ১ কোটি ৬ লাখ ১ হাজার ৩৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ১১ লাখ ২ হাজার ৮৫৫ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
প্রথম দফায় অগ্রাধিকার তালিকা ছাড়া ৪০ বছরের বেশি বয়সীরা শুধু নিবন্ধন করতে পেরেছিলেন। মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এবার সরকার টিকা দিতে সাধারণের বয়সসীমা ৩৫ এ নামিয়ে এনেছে। এর ফলে ৩৫ বয়সের বেশি সবাই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। যদিও ৩৫ বছরের নিচে ফ্রন্টলাইনাররা এখন নিবন্ধন করতে পারছেন না। অবশ্য এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচারক প্রফেসর ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ইনকিলাবকে বলেছেন, খুব শিগগিরই ৩৫ বছরের নিচে থাকা ফ্রন্টলাইনারদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে। এমনকি গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে নিবন্ধন করার বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। এদিকে মাঝের সময়টায় গণনিবন্ধন বন্ধ থাকলেও জুনে মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বিবেচনায় নিবন্ধন চালু করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীই সবকিছু সঠিক থাকা স্বত্তে¡ও নিবন্ধন করতে পারছেন না। নিবন্ধনের সুযোগ দিলেও নিবন্ধন করতে না পারা এবং টিকা নিতে না পেরেই অনেক শিক্ষার্থীকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
সূত্র মতে, কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার ও মর্ডানার এবং চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের প্রথম চালান এলে গত ৭ জুলাই দ্বিতীয় দফায় টিকা নিবন্ধন শুরু হয়।
এদিকে ২৭ জুলাই দেশের সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে। আগের দিন ২৬ জুলাই দেশব্যাপী সিনোভ্যাক টিকা চালু করা হয়। ইতোমধ্যে মধ্যে বিশেষ অগ্রাধিকার হিসেব বয়সসীমার শর্ত শিথিল করে বিদেশগামী কর্মীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, শনিবার বেলা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত মোট ১ কোটি লাখ ৬ লাখ ১ হাজার ৩৩৪ জন নিবন্ধন করেছেন। অথচ গত ৬ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধনের সংখ্যা ছিল ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ২৫৮ জন।
অধিদফতর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মোট ১১ লাখ ২ হাজার ৮৫৫ ডোজ টিকাদানের মধ্যে প্রথম ডোজ হিসেবে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩টি, ফাইজার-বায়োএনটেকের ৪৯ হাজার ৩১২টি, সিনোফার্মের ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪৬৯টি এবং মডার্নার ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৯টি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত অক্সফোর্ডের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪২ লাখ ৯৭ হাজার ৪০৮ জন।
এদিকে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৪১১ জনে। এ পর্যস্ত ১৭ হাজার ৬৬৯ জন মারা গেছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে। জুন থেকে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন দেশে প্রাধান্য বিস্তার করেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরিসংখ্যানে বলছে, দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় নতুন করে বাড়তে থাকা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে। গত কয়েকদিন ধরে নতুন শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সবার মধ্যে টিকা নিতে আগ্রহ দেখা গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত