হিমাগার থেকে আলু নিচ্ছেন না কৃষকেরা, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে কিস্তি সুবিধার দাবি
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২১, ১৯:২৫ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০৭
মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখানে আলুর দাম আরও ধস নেমেছে, দাম কমে যাওয়ার কারণে বর্তমান দামে আলু বিক্রি করলে খরচের টাকা উঠবে না বলে হিমাগার থেকে অনেকেই আলু তুলছেন না। অন্যদিকে আলু সংরক্ষণের ভাড়া এবং কৃষক-ব্যবসায়ীকে দেওয়া ঋণ আদায় করতে না পেরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিপাকে পড়েছেন হিমাগারের মালিকেরা। জানা যায়, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে সারচার্জ ব্যতিত ছয় মাসের কিস্তি সুবিধা দাবি করেছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)। স¤প্রতি সংগঠনের নেতারা বিদ্যুৎ্ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে মার্চ থেকে মে এই তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল জুন পরবর্তী সময়ে সারচার্জ ব্যতিরেকে ছয কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের সুযোগ চান। সংগঠনের প¶ থেকে বলা হয়, বর্তমানে হিমাগার মালিকরা আর্থিক সংকটে রয়েছে।
২০২১ মৌসুমে বাংলাদেশে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে দাম কম ও অধিক ফলনের কারণে কৃষকের বাড়িতে গোলাজাত আলু এখনো অবিক্রিত থাকায় হিমাগার থেকে আলু বের হচ্ছে না। বর্তমানে মণপ্রতিআলু ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সংরক্ষণকারী কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আলু বের না করায় হিমাগার মালিকরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এই কারণে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে মালিকরা অপারগ।
সিরাজদিখান নেপচুন কোল্ডষ্টোরেজের ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, আলুর বাজার মন্দা বিধায় আলু নিচ্ছে না কৃষক। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল জুন পরবর্তীতে সারচার্জ ব্যতিরেখে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের সুযোগ করে দিলে ভালো হয়। শবনম কোল্ডষ্টোরেজের ম্যানেজার মোঃ মতিউর রহমান মতিন বলেন, বৈশি^ক কভিট-১৯ করোনা ভাইরাস সংক্রমনের পরিপ্রেক্ষিত কৃষিভিক্তিক হিমাগার শিল্পসমূহের মার্চ,এপ্রিল ,মে ও জুন মাসের বকেয়া বিল পরবর্তীতে কিস্তির মাধ্যমে সুযোগ প্রদান করলে ভালো হয়। বিদ্যুৎ,জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় বিদ্যুৎ বিভাগকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল কিস্তিতে পরিশোধ সংক্রান্ত বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসাসিয়েশন এর নিকট হতে প্রাপ্ত পত্রের ছায়ালিপি প্রেরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরাধ জানানো হয়েছিল। আলুর বাজার কম বিধায় হিমাগারে আলু সংরক্ষনকারী কৃষকগন শবনম কোল্ড ষ্টোরেজ হতে এখনো আলু বের করছেন না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিরাজদিখান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বকেয়া বিলের জন্য আগামী ১০/০৬/২০২১ইং তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধের জন্য চিঠি দিয়েছেন। অন্যথায় যে কোন সময় আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবেন। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে গরীব কৃষকের আলু পচে হিমাগারে নষ্ট হবে, এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেরে যাবে। নাহার কোল্ডষ্টোরেজের ম্যানেজার হারুণ মিয়া বলেন, মাসে ১০লাখ টাকার উপর বিদ্যুৎ বিল আসে। আলুর দাম আরও ধস নেমেছে, দাম কমে যাওয়ার কারণে বর্তমান দামে আলু বিক্রি করলে খরচের টাকা উঠবে না বলে হিমাগার থেকে অনেকেই আলু তুলছেন না।
অন্যদিকে আলু সংরক্ষণের ভাড়া এবং কৃষক-ব্যবসায়ীকে দেওয়া ঋণ আদায় করতে না পেরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিপাকে পড়েছি। শাহাজালাল কোল্ডস্টোরেজের মালিক আলহাজ খলিলুর রহমান বাবুল বলেন, হিমাগার সমূহের নিকট থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ,জ¦ালানী ও খনিজসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী নিকট বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে কিস্তি সুবিধার দাবি জানানো হয়েছে। অথচ মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখার সুযোগ নেই বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে শবনম কোল্ডস্টোরেজকে চিঠি দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সিরাজদিখান জোনাল অফিসের ডিজিএম খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, বকেয় বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে আরইবি আমাদের কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। এছাড়া সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোন বিল বাকি রাখা যাবে না। তাই বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের জন্য চিঠি দিয়েছি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত