হিংস্রতা-নৃশংসতার ভয়াবহ বিস্তার

  মহিউদ্দিন খান মোহন

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২১, ১২:১১ |  আপডেট  : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৪

মানুষের মন থেকে স্নেহ-মমতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসা, সহিষ্ণুতা-সংযম কি একেবারে উধাও হয়ে গেছে? কতিপয় মানুষের আচরণ ও কর্মকান্ড এ প্রশ্নের উদ্ভব ঘটিয়েছে। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, প্রতিশোধ পরায়নতা, জিঘাংসা আজ সমাজের দেহে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। পান থেকে চুন খসলেই মানুষ ধারণ করছে হিংস্র হায়েনার রূপ। স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটলে ভাই ভাইয়ের, সন্তান পিতা-মাতার, স্বামী স্ত্রীর, স্ত্রী স্বামীর, বন্ধু বন্ধুর প্রাণ সংহার করতে দ্বিধা করছে না। আপনজনের বুকে সীমারের মতো ছোরা বসিয়ে দিতে কিংবা জবাই করতে ওদের হাত এতটুকু কাঁপছে না। কেন মানুষ এমন হন্তারক হয়ে উঠল- এ প্রশ্নের জবাব খোঁজার আগে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

গত ২০ জুন বাংলাদেশের খবরসহ বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুর এলাকার ট্রিপল মার্ডারের খবরটি পড়ে শিউরে উঠেন নি, এমন মানুষ বোধকরি কমই পাওয়া যাবে। খবরে বলা হয়েছে, আগেরদিন সকালে মেহজাবিন ইসলাম মুন নামের এক তরুণী ৯৯৯-এ ফোন করে জানায়, সে তার মা, বাবা ও ছোট বোনকে হত্যা করেছে। পুলিশ যেন তাড়াতাড়ি সেখানে যায়। নাহলে স্বামী ও সন্তানকেও সে মেরে ফেলবে। ফোন পেয়ে কদমতলী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং মুনের বাবা মাসুদ রানা, মা মৌসুমী ইসলাম, ও ছোট বোন জান্নাতুল ইসলামের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। মুন পুলিশকে জানিয়েছে, পানীয়র সাথে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে সে একাই তিনজনকে খুন করেছে। আর এ হত্যার পরিকল্পনা সে করছিল ছয়মাস আগে থেকে। কী নৃশংস! ভালেই গা শিউরে ওঠে। কতটা হিংস্রতা মনের মধ্যে বাসা বাঁধলে নিজের মা-বাবা-বোনকে এমন পৈশাচিক কায়দায় একজন মানুষ হত্যা করতে পারে তা ভাববার বিষয়। ঘটনার বিবরণ যা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বোঝা যায়, পরিবারের ওই সদস্যদের ওপর মুনের প্রচন্ড ক্ষোভ ছিল, যা একসময় হিংস্রতায় রূপ নেয়। আর তা থেকেই এই নৃশংস হত্যাকান্ড।

ক্রমাগত বেড়ে চলা এ ধরনের নৃশংসতার বিষয়টি সচেতন মানুষদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, মানুষের মধ্যে স্বার্থপরতা, অসহিষ্ণুতা ও হিং¯্রতা ক্রমশই ব্যাধির রূপ ধারণ করছে; যার ফলশ্রুতিতে ঘটে চলেছে নৃশংস ঘটনাবলী। লক্ষণীয় হলো, এখন খুনী শুধু করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, নিহত ব্যক্তির লাশকে কয়েক টুকরা করে আলামত গায়েবের চেষ্টাও করছে। মনে পড়ে ১৯৮৯ সালে বিক্রমপুরের লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মাতিন খানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওরা তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার লাশকে টুকরো টুকরো করে পদ্মা নদীতে ফেলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে সে লাশের কয়েকটি অংশ পাওয়া গেলেও মাথাসহ অনেক অংশই পাওয়া যায়নি। লাশ না পাওয়ায় সে হত্যা মামলারও কোনো গতি হয়নি। ওই হত্যাকান্ডটি তখন দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। যেমন আলোড়ন তুলেছিল ১৯৯৯ সালে লক্ষীপুরের আইনজীবী এ্যাডভোকেট নূরুল ইসলামের হত্যাকান্ড। তাকেও হত্যার পর দুর্বত্তরা লাশ কয়েক টুকরা করে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল। পরের বছরই ঢাকায় সংঘটিত একটি নৃশংস জোড়া খুনের ঘটনায় দেশবাসী চমকে উঠেছিল। সূত্রাপুর থানার গেন্ডারিয়ায় সায়েম ও মহসীন নামের দুই যুবককে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা হত্যাকান্ডের চিহ্ন মুছে ফেলার অভিপ্রায়ে লাশ দুটিকে বারো টুকরা করে সুয়ারেজ লাইনে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনাগুলো মানসিক বিকৃতির দৃষ্টান্ত। লাশ টুকরা করার সে প্রবণতা এখনও আছে দুর্বৃত্তদের মধ্যে। মাঝেমধ্যেই গণমাধ্যমে সেসব খবর আসে।

গত ২৫ মে রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় এক যুবকের খন্ডিত মৃতদেহ। পরবর্তীতে জানা যায়, ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুর রহমান প্রতিবেশী যুবক আজহারুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ কয়েক টুকরা করে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে। আজহারের স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম রহমানের অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় ওই হত্যাকান্ড। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, হত্যাকান্ড ঘটানোর পর ইমাম রহমান ফজরের নামাজে ইমামতিও করেছিল। পুলিশের তদন্তে খুনের রহস্য বেরিয়ে আসে। ৩১ মের দৈনিক পত্রিকাগুলোতে রাজধানীর মহাখালীর আমতলীতে একটি ড্রামের মধ্যে এক ব্যক্তির খন্ডিত লাশ উদ্ধারের খবর প্রকাশিত হয়। পরে পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এক হত্যাকান্ডের কাহিনি। স্বামী ময়না মিয়ার দ্বিতীয় বিয়ে মানতে না পেরে স্ত্রী ফাতেমা খাতুন খুন করে তাকে। ধরা পড়ার পরে সে পুলিশের কাছে যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে, তা রীতিমতো পিলে চমকানো। জুসের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে স্বামীকে অচেতন করে তার বুকের ওপর বসে চাকু দিয়ে গলা কেটে তাকে হত্যা করে। তারপর প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে লাশ কয়েক টুকরা করে তিন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসে। একই দিনের পত্রিকায় প্রকাশিত অপর এক খবরে বলা হয়েছে, গাজীপুরে পরকীয়ার কারণে স্ত্রী ও তার প্রেমিককে মারধরের প্রতিশোধ নিতে তারা দুইজনে মিলে ঘুমন্ত সুমন মোল্লাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ছয় টুকরো করে। পরে লাশের টুকরা ও হত্যায় ব্যবহৃত করাত ও চাপাতি বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়। ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে ঘটনার একচল্লিশ দিন পরে পুলিশ ক্লুলেস এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং সুমনের স্ত্রী আরিফা বেগম ও তার প্রেমিক তনয় সরকারকে গ্রেফতার করেছে। চতুর্থ ঘটনাটি নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার। পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী হীরা চৌধুরী ঘুমন্ত দুই শিশু সন্তানের পাশেই গলা কেটে হত্যা করে স্ত্রী তানজিদা আক্তার পপিকে।

মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব। কিন্তু এ কথা সত্যি যে, পৃথিবীতে নৃশংস ঘটনাগুলো মানুষের দ্বারাই সংঘটিত হয়। একটি হিংস্র পশু যখন তার উদর পূর্তির জন্য কোনো নীরিহ প্রাণিকে হত্যা করে, তখন সেটাকে স্বাভাবিক বলেই ধরে নেওয়া হয়। কেননা, ওটাই পশুর ধর্ম। ওদের কোনো বিবেক-বুদ্ধি নেই, বিবেচনাবোধ নেই। পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য ওরা একে অপরকে হত্যা করতে দ্বিধা করে না। কিন্তু মানুষ তো সামাজিক জীব। তার বিবেক-বিবেচনা এবং ভাল-মন্দ বিচারবোধ আছে। সৃষ্টিকর্তা তাদের মধ্যে ওইসব গুণাবলী দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা কতিপয় মানুষের মধ্যে সে বিবেক বিবেচনার প্রচন্ড অনুপস্থিতি লক্ষ্য করছি। এরা বিবেক বিসর্জন দিয়ে হিংস্র পশুর ন্যায় আচরণ করতে দ্বিধাবোধ করছে না। সংখ্যায় অবশ্য তারা কম। তবে, তাদের দ্বারা সংঘটিত ঘটনাগুলো মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করছে, একই সঙ্গে  তাদেরকে শঙ্কিত করে তুলছে।

মানুষ মানুষকে খুন করে কেন- এ প্রশ্নের সোজাসাপ্টা কোনো জবাব হয়তো নেই। একটি মানুষ যখন সুস্থ স্বাভাবিক থাকে, তার দ্বারা মানুষ খুন তো দূরের কথা, অনাবশ্যক কোনো প্রাণি হত্যাও সম্ভব নয়। তারপরও কিছু মানুষকে হন্তারক হয়ে উঠতে দেখা যায়। খুনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, প্রধানত স্বার্থোদ্ধার বা স্বার্থহানির ঘটনা থেকেই কারো কারো মনে জিঘাংসা প্রবৃত্তি জেগে ওঠে। 

মানবসমাজে খুনের ঘটনা নতুন নয়। সৃষ্টির আদিকাল তথা  প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই তা চলে আসছে। সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে আমরা নৃশংস খুন ও বর্বরতার ঘটনা দেখতে পাই। মানুষের হাতে মানুষের খুনের ঘটনা সব সময়ই ঘটেছে। তবে এখনকার মতো তা মহামারী আকারে ছিল না। বর্তমানে সংবাদপত্রের পাতায় কিংবা টিভি চ্যানেলের পর্দায় প্রতিনিয়ত এ ধরনের খবর আসে। সামাজিক অস্থিরতার কারণে এসব ঘটনার প্রকোপ বেড়ে গেছে- এটা সামাজ বিজ্ঞানীদের ভাষ্য। তবে, মানুষের স্বার্থান্ধতা, স্বার্থপরতা কিংবা অন্যকোনো শত্রæতা বশত খুনের ঘটনা ইতিহাসের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে। সুতরাং এটা বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়, স্বার্থান্ধতা এবং লোভ মানুষকে কী রকম নৃশংসতার পথে ঠেলে দিতে পারে! স্বার্থ সে ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা সম্প্রদায়গত যেটাই হোক না কেন, তা মানুষকে হায়েনার চেয়েও হিংস্র করে তুলতে পারে। যার ফলশ্রæতিতে ঘটে হত্যার মতো  নৃশংস ঘটনা।

যাহোক, বর্তমান বাস্তবতায় ফিরে আসি। সমাজে ক্রমবর্ধমান হিংস্রতা ও নৃশংসতার কারণ কি তা নিয়ে সচেতন মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এ নিয়ে সমাজতত্ত¡বিদরা তাদের অভিমত ব্যক্ত করছেন গণমাধ্যমে। তারা বলছেন, নৈতিকশিক্ষার অভাব এবং ধর্মীয় অনুশাসন থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে কিছু মানুষের মূল্যবোধে ধস নেমেছে। আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে তারা হেন কোনো জঘন্য কাজ নেই যা করতে পারে না। তাছাড়া পারিপার্শ্বিক পরিবেশও কতিপয় মানুষের মানসিকতায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। গত ২১ জুন বাংলাদেশ প্রতিদিনের ‘ভয়ংকর রূপে পারিবারিক সামাজিক অপরাধ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ের পারিবারিক সহিংসতা ও নৃশংস ঘটনা চরম নিরাপত্তহীনতা সৃষ্টি করেছে। এখন পিতার কাছে সন্তান, ভাইয়ের কাছে বোনও নিরাপদ নয়। সমাজ বিজ্ঞানীদের প্রায় সবাই মানুষের এ মানসিক বিকৃতির জন্য অযাচিত আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টানেটের অপব্যবহারকে দায়ী করেছেন। তাদের মতে, গবেষণা চালিয়ে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতার সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে বেরা করা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। নয়তো চরম মূল্য দিতে হবে রাষ্ট্রকে। তারা এ সর্বনাশা প্রবণতা রোধে বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার ওপরও জোর দিয়েছেন। একই পত্রিকার ২২ জুন সংখ্যায় এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় অপরাধবিষয়ক টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’ এবং অনলাইন গেম ‘পাবজি’, ‘ফ্রি ফায়ার’ দেখে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অপরাধবিষয়ক এসব সিরিয়াল দিনের পর দিন দেখে ঠান্ডা মাথায় কাছের মানুষকে খুন করার মতো রোমহর্ষক ছক আঁটছে কেউ কেউ। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, সবাই এ ধরনের অপরাধ করেন না। তবে যাদের ব্যক্তিত্ব ত্রুটিপূর্ণ তারাই এধরনের কান্ড ঘটিয়ে থাকেন। এছাড়া ‘প্যারানোয়েড সাইকোসিস’ ‘ডিলুইশনাল ডিজঅর্ডারে’ আক্রান্তরাও এ ধরনের নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। তারা এ অপরাধ প্রবণতা রোধকল্পে ইন্টারনেট ও আকাশ সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

সাম্প্রতিক সময়ের নৃশংস খুনের ঘটনাসমূহ বিবেকবান মানুষদের ভাবিয়ে তুলেছে। তার শংকিত এই ভেবে যে, এ ধরনের ঘটনা যািদ ঘটতেই থাকে, তাহলে সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। অনেকে এ পরিস্থিতিকে সমাজদেহে ক্ষয়রোগ (যক্ষা) সৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করেছেন; যা সমাজদেহকে ভেতর থেকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলবে। যক্ষা নিরাময়ের জন্য যেমন দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তেমনি হিংস্রতা ও নৃশংসতার প্রবণতার লাগাম টেনে ধরতেও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ আবশ্যক। সমাজ ও রাষ্ট্রের যারা নেতৃত্ব দেন, বিষয়টি তাদের সক্রিয় বিবেচনা রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে।


লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।  

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত