স্কুল-কলেজের বিষয়ে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ১৭:১৯ |  আপডেট  : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭

আমাদের ছাত্র সংখ্যা অনেক বেশি। যখন তারা স্কুলে আসবে তখন সংক্রমণ বেড়ে যাবে- এ মন্তব্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের।

আর এজন্য স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়টি অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি।  চলমান লকডাউন বা বিধিনিষেধ আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর পর রোববার (৩০ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।   

করোনা সংক্রমণের কারণে আগামী ১২ জুন পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে ১৩ জুন খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গত ২৬ মে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী একথা বললেও শনিবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা যে তারিখই নির্দিষ্ট করি না কেন, সেই সময়ের আগে করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি নেবো না।  

স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে এক প্রশ্নে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ রেখেছি। তাতে মানুষের চলাচলের প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকাটা স্বস্তিদায়ক।

সংক্রমণের বতর্মানের ট্রেন্ডে স্কুল-কলেজ খোলাটাও পিছিয়ে যেতে পারে- এ প্রশ্নে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেটি তাদের বিষয়। উনি বলেছেন এটা নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত খুলবে না।

তাহলে ৫ শতাংশের নিচে না আসা পর্যন্ত লকডাউন থাকবে- অপর এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেবেন। যদিও আমরা বিকল্প ব্যবস্থাগুলো চিন্তা-ভাবনা করছি স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে। যে রকম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে অনলাইন পরীক্ষা, অনলাইন ক্লাস চলমান।

‘সেক্ষেত্রে আমরা দেখি, অবস্থা বুঝে…, আমাদের ছাত্র সংখ্যা অনেক বেশি। যখন তারা স্কুলে আসবে তখন সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাবে। আমাদের বিধিনিষেধ থাকার কারণে কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। ’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, জরুরি প্রয়োজনে সরকারি অফিস খোলা আছে। সেটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর ওপর আমরা বিশেষ নজর রেখেছি, যদি সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়...ওই জায়গাগুলোতে চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারব। বিষয়গুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আপাতত স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’

তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয়ভাবে লকডাউন দিয়েছি। ভারতের বিষয়টির আশঙ্কা থেকেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সেটা আমরা করছি। সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে, আমরা সেটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। সেই বিষয়ে আমরা হয়তো জানাব, কী করা যেতে পারে।’
 
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, যশোর ও নাটোর-জেলাগুলোর মধ্যে সাতক্ষীরার বিষয়টি আমরা একটু বেশি দেখছি। হয়তো সিদ্ধান্ত আসবে কীভাবে এটা করা যায়। তবে আমরা চাইব যে জায়গাটিতে স্পেসিক্যালি আক্রান্ত সেই জায়গাটিতে শনাক্ত করার চেষ্টা করব। এমনও হতে পারে পুরো সাতক্ষীরা নয়, যে স্থানটিতে বেশি সংক্রমণ সেই জায়গা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব। যাতে মানুষের জীবনজীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকার সেই বিষয়টি খেয়াল রাখছে।’

বলা হচ্ছে সংক্রমণ ৫ শতাংশ স্বাভাবিক, এখন সংক্রমণ কত শতাংশ- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন ৯ শতাংশের বেশি, ৮ শতাংশের বেশি এমন আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ ও কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আরও এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ চলমান থাকবে। আমরা চাইছি সংক্রমণটাকে ৫ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য। ৫ শতাংশে নেমে এলে বলা হয় স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি আছে, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নয়। আমরা সেই রকম অবস্থার দিকে নিতে চাই।’ 

মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে সাড়া দিচ্ছে। প্রত্যেকে সচেতন হয়েছে, মানুষ অপ্রয়োজনে বাইরে আসছে না। এটা একটা ভালো লক্ষণ, এক্ষেত্রে আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি, বলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত