সু চি ‘সুস্থ’ আছেন, দিন কয়েকের মধ্যেই আদালতে হাজির হবেন: সেনাপ্রধান
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১, ১১:১৮ | আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮
মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান দাবি করেছেন, দেশটির বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চি ‘সুস্থ’ আছেন। তিনি দিন কয়েকের মধ্যে আদালতে হাজির হবেন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মিয়ানমারে গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং প্রথম কোনো টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। তিনি হংকংয়ের একটি টেলিভিশনকে গত বৃহস্পতিবার দুই ঘণ্টার সাক্ষাৎকার দেন। তাঁর পুরো সাক্ষাৎকার এখনো প্রচারিত হয়নি। তবে তাঁর সাক্ষাৎকারের একটি অংশ গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মিন অং হ্লাইংয়ের সাক্ষাৎকারের যে অংশটুকু সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তিনি বলেন, ‘অং সান সু চি সুস্থ আছেন। তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিনি কয়েক দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হবেন।’
সু চির রাজনৈতিক অর্জন সম্পর্কে সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধানকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘সংক্ষেপে, তিনি (সু চি) যা কিছু করতে পারেন, তা করেছেন।’
সেনা অভ্যুত্থানের জেরে গৃহবন্দী হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সু চিকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়েছে জান্তা সরকার। এসব মামলার মধ্যে ঔপনিবেশিক আমলের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলাও রয়েছে।
গৃহবন্দী হওয়ার পর আগামীকাল সোমবার প্রথমবারের মতো সশরীরে আদালতে হাজির হতে পারেন সু চি। আগে তাঁকে মাত্র একবার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল। তাঁকে এখন পর্যন্ত তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে দেওয়া হয়নি।
মিয়ানমারে গত বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা অভিমত দেয়। তবে এই নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এই অভিযোগ নাকচ করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে কথিত জালিয়াতির অজুহাত তুলে দেশটির সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান করে। তারা সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাতের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। একই সঙ্গে সু চিসহ দেশটির বেসামরিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে।
সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সেনাশাসনবিরোধী এই বিক্ষোভে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত আট শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া হাজারো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা নিযুক্ত নির্বাচন কমিশন এনএলডির নিবন্ধন বিলুপ্ত করতে চায়। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে এনএলডির বিরুদ্ধে কমিশন এমন ব্যবস্থা নিতে চায়। এক নির্বাচন কমিশনারের উদ্ধৃতির বরাত দিয়ে মিয়ানমার নাউ সংবাদমাধ্যম গত শুক্রবার এমন খবর দিয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান তাঁর সাক্ষাৎকারে আবারও দাবি করেন, গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে এনএলডি জালিয়াতি করেছে।
মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্বহাল ও সু চিসহ গ্রেপ্তার বেসামরিক ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে দেশটির জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বহাল রয়েছে। তবে দেশটির সামরিক জান্তার এখন পর্যন্ত এই আহ্বানের প্রতি কর্ণপাতের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত