এসএসসি পরীক্ষায় বসলো ২০ লাখ শিক্ষার্থী

সারা দেশে একযোগে শুরু হলো এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৪ |  আপডেট  : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৯

এসএসসি পরীক্ষার্থী (ফাইল ছবি)

সারা দেশে একযোগে শুরু হলো ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে মোট ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন।

প্রথম দিন সকাল ১০টায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা (আবশিক) প্রথম পত্র, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা। পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে হলে ঢুকতে হচ্ছে।

করোনা মহামারির আগে প্রতিবছর সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হতো। কিন্তু গত বছর করোনাভাইরাস ও বন্যার কারণে সাত মাস পিছিয়ে পরীক্ষা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবছর পরীক্ষা এগিয়ে এপ্রিল মাসের শেষ দিন শুরু হলো। ২০২৩ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময় তিন ঘণ্টায়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

পরীক্ষার সূচি

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৪ মে শুরু হয়ে শেষ হবে ৩০ মে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল ২০২৩ হতে ২৫ মে ২০২৩ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ মে শুরু হয়ে শেষ হবে ৩ জুন। 

এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৫ মে শুরু হয়ে শেষ হবে ৪ জুন।

পরীক্ষার্থী সংখ্যা

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭০ জন এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪০৫ জন। 

সাধারণ শিক্ষাবোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা বোর্ডেই সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এরপর রাজশাহী বোর্ডে ৯১ হাজার ৫৫৭ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৮৯ হাজার ৯১৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৫৮ হাজার ৯৮৭ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪২ হাজার ২৪ জন, যশোর বোর্ডে ৩৯ হাজার ৩৮৫ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৩৪ হাজার ২০ জন, বরিশাল বোর্ডে ২৪ হাজার ১৫৬ জন এবং সিলেট বোর্ডে সবচেয়ে কম ২৩ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। যাদের ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষা দেবে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে, ৮ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৫ জন মানবিক বিভাগ থেকে ও ২ লাখ ৮০ হাজার ৮১৬ জন শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৩ জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ৫১ হাজার ১২৮ জন।

আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৭ হাজার ৩৩৪ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, এরমধ্যে ছাত্রী ৩০ হাজার ৪৩৩ জন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৯টি সাধারণ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী বেড়েছে ৩৮ হাজার ৬০৯ জন।  এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি।

দেশের ৩ হাজার ৮১০ কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। এবার ২৯ হাজার ৭৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বসছে। এ ছাড়া গতবারের তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি।

এছাড়া দেশের বাইরে আটটি কেন্দ্রে থেকে এবার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে জেদ্দায় পরীক্ষায় অংশ নেবে ৮৯ জন, রিয়াদে ৫১ জন, ত্রিপলিতে ৪ জন, দোহায় ৭৭ জন, আবুধাবীতে ৪১ জন, দুবাইতে ২৭ জন, বাহরাইনে ৬৫ জন, সাহামে (ওমান) ২০ জন। 

‘জাতীয় মনিটরিং ও আইন শৃঙ্খলা’ সংক্রান্ত কমিটির নির্দেশনা

দেশের সবচেয়ে বড় এই পাবলিক পরীক্ষাকে ঘিরে ‘জাতীয় মনিটরিং ও আইন শৃঙ্খলা’ সংক্রান্ত কমিটির সভায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে। নির্দেশনায় জানানো হয়, পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনও পরীক্ষার্থী বিলম্বে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে, তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।

পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কোন সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট নিয়ম অনুযায়ী খুলবেন।

পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা ও উপজেলা পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ছাড়া অন্য কেউই প্রবেশ করতে পারবে না। বরাবরের মতো কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কারও মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি নেই। তবে কেন্দ্র সচিবকেও ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফিচার ফোন ব্যবহার করতে হবে। 

প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত থেকে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্নপত্র বের করে পুলিশি পাহারায় সকল সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরাও কোনও ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এমন কোনও যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।

শিক্ষা বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো অনলাইনে সার্বক্ষণিকভাবে তথ্য আদান প্রদান করবে।

কোচিং সেন্টার বন্ধ

পরীক্ষা উপলক্ষে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে সকল ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রশ্নফাঁস ও প্রশ্নফাঁসের গুজব রোধে ফেইসবুক, মোবাইল ব্যাংকিং ও বিজি প্রেসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর বিটিআরসির ও গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার।

এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে পরীক্ষার্থী ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত