সাধারণ নাগরিক সমাজের দুই হাজার টাকা কর বাতিলসহ ১২ প্রস্তাব

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৫ জুন ২০২৩, ১৪:৩২ |  আপডেট  : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:১৩

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে দুই হাজার টাকা বাধ্যতামূলক কর রিটার্ন দাখিল বাতিলসহ ১২টি প্রস্তাব জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ।

সোমবার (৫ জুন) প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ আয়োজিত আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকার বিশাল বাজেট উপস্থাপন করেছে। কিন্তু এই বাজেটে সাধারণ নাগরিকদের প্রত্যাশা ছিল তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমিয়ে আনা, শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষা খাতে ব্যয় সাশ্রয়ী ও নিরাপত্তা দেওয়া, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ভ্রমণে সহনীয় সামাজিক বেষ্টনী গড়ে তোলা হবে। কিন্তু বাজেট আমাদেরকে হতাশ করেছে। যেমন ৪৪টি সেবা প্রদান বা গ্রহণের ক্ষেত্রে একজন সাধারণ নাগরিককে টিআইএন সার্টিফিকেট প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর টিআইএন থাকলেই তাকে বাধ্যতামূলক রিটার্ন দিতে বাধ্য করা হয়েছে। পাশাপাশি রিটার্ন স্লিপ গ্রহণের সময় ২০০০ টাকা বাধ্যতামূলকভাবে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি কর নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সাধারণ নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। নিম্ন বেতনের চাকরিজীবী অথবা ক্ষুদ্র আয়ের ব্যবসাতেও কর দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের অভ্যন্তরে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর হিসেবে ২০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে নাগরিক অধিকারের পরিপন্থি। সামাজিক নিরাপত্তার কথা বলে এক লাখ দশ হাজার কোটি টাকা দুই কোটি পরিবারের মধ্যে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। যার ফলে একটি পরিবার ৫০০ টাকার স্থলে ৫৫০ টাকা মাসিক সুবিধা ভোগ করবে। আমরা মনে করি এই অর্থ দেওয়ার মাধ্যমে একপ্রকার ভিক্ষাবৃত্তিকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সংগঠনের দাবিগুলো হলো

১) দুই হাজার টাকা বাধ্যতামূলক কর রিটার্ন দাখিল বাতিল করতে হবে। তাছাড়া ৪৪ সেবার বিপরীতে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা চলবে না।

২) অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ কর বাতিল করতে হবে।

৩) সামাজিক নিরাপত্তার বলয় তৈরি করতে হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে স্বাবলম্বীভাবে গড়ে তুলতে হবে।

৪) ভূমিহীন নাগরিকদের বাসস্থানের ব্যবস্থার পাশাপাশি স্বাবলম্বীভাবে গড়ে তুলতে হবে।

৫) বেকারদের কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে দ্রুত বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৬) বাজারে ন্যায্যমূল্যের পণ্য পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

৭) নাগরিকের সামর্থ্যের বাজার নিশ্চিত করতে হয়।

৮) মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৯) দ্রুত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আদলে সার্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে

১০) জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকটের দ্রুত সমাধান করতে হবে।

১১) দুর্নীতিবাজ লুটপাটকারী ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

১২) সবার জন্য সুশিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজলভ্য ও রাষ্ট্রের ব্যবস্থায় সকল নাগরিকদের জন্য সহনীয়ভাবে গড়ে তুলতে হবে।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মেজর (অব.) ড. শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, বাংলাদেশ লেবার পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মামুন, এনডিপির যুগ্ম সম্পাদক লায়েকুজ্জামান হীরা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ ফরিদ উদ্দিন, নকীব ও কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মো. সেলিম প্রমুখ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত