সাংবাদিক রোজিনা যেন ন্যায়বিচার পায় সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে: তথ্যমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২১, ১৩:৪৯ |  আপডেট  : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৭

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম যাতে ন্যায় বিচার পান, সেটি চেষ্টা করছি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। রোজিনা ইসলাম যাতে ন্যায়বিচার পান সে চেষ্টা প্রথম থেকেই আমি করে এসেছি।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর বাসভবনে যান। নেতারা তথ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার, অবিলম্বে মুক্তি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হেনস্তাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবি করা হয়।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান, নারী বিষয়ক সম্পাদক রীতা নাহার, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তপন বিশ্বাস ও শামীম আহমেদসহ আরও কয়েকজন।

আলোচনা শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন বিষয়টি নিয়ে গতকাল বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছি, সেখানে সব কথা ছিল, আবার নতুন করে একই কথা বলার প্রয়োজন নেই। সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম যাতে ন্যায় বিচার সে জন্য প্রথম থেকেই চেষ্টা করে এসেছি। সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাই, বিষয়টিকে ইমোশনালি না দেখে বিষয়টি বাস্তবতার নিরিখে বিচার করার জন্য। আমি আপনি সবাই যেকোনো সময় ভুল করতে পারি। মানুষ মাত্রই ভুল করে। একজন রোজিনা ইসলামও ভুল করতে পারেন। কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। সেটিও মাথায় রাখতে হবে। তবে তিনি যাতে ন্যায় বিচার পান, সেটি চেষ্টা করছি। আমি আপনাদের মন্ত্রী, আপনাদের মানুষ, সুতরাং আপনাদের দাবিগুলো সহানুভূতির সঙ্গে দেখে যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু করার চেষ্টা আমার পক্ষ থেকে থাকবে। " নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি করার দাবির বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করব।’

সোমবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে বেলা তিনটার দিকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাঁকে রাত নয়টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। সেই মামলায় রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে গত মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামের রিমান্ড নাকচ করে তাঁকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। গতকাল বুধবার রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তভার পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।

রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও তাঁর বিরুদ্ধে মামলার পর পরই দেশে-বিদেশে বিক্ষোভ হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠন বিবৃতি দিয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও তাঁর মুক্তির দাবি জানায়। দেশেও বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি জানান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত