সন্ত্রাস ও গুজবনির্ভর রাজনীতির চর্চায় বিএনপি: কাদের

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৫৯ |  আপডেট  : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:৫৬

হেফাজতের মামলায় জড়িয়ে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে বলে বিএনপির যে অভিযোগ, তার ‘তালিকা ও প্রমাণ’ চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে ঢালাও অভিযোগ না করতেও বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, ‘মামলায় আসামি এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া নেতাকর্মীদের কোথায় হয়রানি করা হচ্ছে তার তালিকা দিন। ঢালাও অভিযোগ না করে স্পট প্রমাণ দিন।’

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকালে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে প্রকৌশলীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার বাসভবন থেকে সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। 

‘হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির সাথে বিএনপির কোনও প্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হেফাজতের মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি করছে’- বিএনপি মহাসচিব মিজা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগ ‘গতানুগতিক, এবং সত্য নয়’ বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।  

তিনি বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম দেশব্যাপী যে তাণ্ডব চালিয়েছে এবং জনগণ তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদে যেভাবে আগুন দিয়েছে তা নিয়ে বিএনপি একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে। অপরাধী কোনও দলের হতে পারে না, ধর্ম কখনও সহিংসতা উস্কে দেয় না।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ধর্মের নামে স্বার্থ হাসিলের নোংরা রাজনীতি করছে এবং সম্পদ নষ্ট করছে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ধরা হচ্ছে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে, এমন অভিযোগ সত্যের অপলাপ।’ 

‘বিএনপিকে সরকার রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে তাদের কর্মীদের দমন করছে’, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের এসব কথা শুনলে জনগণ হাসে। তারা অপরাজনীতি ও মিথ্যাচারকে রাজনীতি মনে করছে।

জনগণের কল্যাণ থেকে দূরে থেকে বিএনপি এখন সন্ত্রাস ও গুজবনির্ভর রাজনীতির চর্চা করছে।’

বিএনপিকে সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের পথ থেকে ফিরে জনকল্যাণমুখী ও ইতিবাচক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসার আহ্বান জানান ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। 

শেখ হাসিনা সরকার রাজনৈতিক নিপীড়নে বিশ্বাসী নয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার সকল দল ও মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই দেশের মানুষের সুরক্ষা তথা সংক্রমণ রোধে শেখ হাসিনা সরকার যে সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের জীবনের সুরক্ষার স্বার্থেই। রাজনীতি জনগণের জন্য, করোনা দল চিনে না। সবাই এই ভাইরাসের শিকার হতে পারে। সুতরাং করোনা নিয়ে রাজনীতি না করে সরকারকে প্রয়োজনে গঠনমূলক পরামর্শ দিন।’

করোনার মহামারি থেকে উত্তরণে সবাইকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং স্রষ্টার অপার কৃপায় নিশ্চয়ই আমরা সবাই এ সংকট কাটিয়ে উঠবো, ইনশাআল্লাহ।’

অবকাঠামো নির্মাণকাজ লকডাউনের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং শতভাগ মাস্ক পরিধান করে এসকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’ 

 

সামনে বর্ষাকাল, তাই বর্ষা শুরু হবার আগেই নির্মাণাধীন কাজ এগিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘বর্ষার আগে কাজ করার এখনই উপযুক্ত সময়। ১৪ তারিখ থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে সড়কে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাস্তা ফাঁকা থাকবে, তাই এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করতে হবে।’

সামনে যেসব প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে তার পেপার ওয়ার্ক এখনই শেষ করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যেন শুকনো মৌসুম এলেই নির্মাণকাজ শুরু করা যায়। বিগত কয়েক বছরে সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। এসব কাজ আরও এগিয়ে নিতে হবে।’

ঢাকা-কক্সবাজার সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন।

ওবায়দুল কাদের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি বিষয়ে বলেন, ‘এই প্রকল্প সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। তাই এই প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও সম্প্রতি গতি পেয়েছে।’

প্রকল্প বাস্তবায়নকালে বা কাজ শুরু হওয়ার আগে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান সড়ক মন্ত্রী।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত