সচিবালয়ে প্রবেশে 'ফি' নির্ধারণের প্রস্তাব
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২২, ১৪:৪৮ | আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৭
সচিবালয়ে প্রবেশে ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। সম্প্রতি এ প্রস্তাব দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে প্রবেশ ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এক বছরের জন্য ফি নির্ধারণ করা হবে। ফির বিনিময়ে এক বছরের জন্য একটি প্রবেশ কার্ড দেওয়া হবে।
বেসরকারি ব্যক্তিদের প্রবেশ ফি বছরে পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এছাড়া প্রস্তাব অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয়ে প্রবেশে বছরে তিন হাজার টাকা এবং জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের প্রবেশ ফি বছরে হবে দুই হাজার ৫০০ টাকা।
সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবার তা নিতে দুই হাজার টাকা ফি দিতে হবে। বেসরকারি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ ফি পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এছাড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সচিবালয়ে বেসরকারি গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রে বছরে সর্বোচ্চ ফি হবে ১০ হাজার টাকা।
সচিবালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনাগত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপনের ব্যয় তুলে আনার পাশাপাশি পরিচালনা-রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ফি আরোপের পেছনে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয় জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবে। সেখানে বলা হয়, সচিবালয়ে কঠোরভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচিবালয়ের প্রবেশপথে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এজন্য দর্শনার্থী গেটে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবহনের জন্য ভেহিক্যাল স্ক্যানারের মাধ্যমে আইডেন্টিফিকেশন করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল কার্ড, ভেহিক্যাল স্টিকার, মনিটরিং ব্যবস্থা, অপারেশন ও ব্যাকআপরুপ স্থাপনসহ অনান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এই ব্যয় মেটানো এবং পরিচালনার জন্য এ ধরনের ফি আরোপ করা হবে। পাশাপাশি এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আসবে।
অর্থ বিভাগের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র এবং সংরক্ষিত, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এখানে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীসহ সিনিয়র সচিব ও সচিবের কার্যালয় অবস্থিত। এখানে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি ব্যক্তি বিভিন্ন মেয়াদে পাশ নিয়ে প্রবেশ করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ভেতরে অনুষ্ঠেয় বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণকারী ও দর্শনার্থীরাও প্রতিদিনই প্রবেশ করছেন। ফলে সচিবালয়ে প্রবেশ পাশ গ্রহণের পূর্বে এক বছর মেয়াদি (সরকারি ব্যতীত) উল্লিখিত হারে প্রতি কার্ডের জন্য নির্ধারিত ফি গ্রহণ করা যেতে পারে।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, প্রথমত সচিবালয়ে যানবাহন ও ব্যক্তি প্রবেশের ক্ষেত্রে রাজস্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিতে পারে কিনা সেটি পর্যালোচনা করা হবে। পাশাপাশি এ বিষয়টির সঙ্গে নিরাপত্তা জড়িত। একটি নির্দিষ্ট ফি নিয়ে জনসাধারণের জন্য সচিবালয় প্রবেশ উন্মুক্ত করা হলে নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা থাকে। সে বিষয়টিও বিবেচনা নিতে হবে। এছাড়া এ ধরনের কার্ড ইস্যুর পর এর অপব্যহার হবে না এটিও নিশ্চিত করতে হবে। সচিবালয়ে বিদ্যমান অবস্থায় গাড়ি পার্কিং করার স্থান কম আছে। ফলে এ অবস্থায় বেসরকারি গাড়ি ফির মাধ্যমে প্রবেশ করার সুযোগ দিলে শেষ পর্যন্ত গাড়ির চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে কিনা সেটিও ভাবতে হবে। যে কারণে বিষয়টি পর্যালোচনা করে মতামত দেওয়া হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত