সংকটে অভিনেত্রীর ভাবনার পাশে শহীদুজ্জামান সেলিম, ক্ষমা চাইলেন সেই যুবক
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২১, ১২:২৬ | আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯
সামাজিকমাধ্যমে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন বিনোদন জগতের অভিনেত্রীরা। কিন্তু বুলিং যখন অভিনেত্রীর মা-বোন পর্যন্ত ছাড় দেয় না, তখন সেই সীমাছাড়া অসভ্যতা কেউ কি সহ্য করতে পারে?
এমনই ঘটনা ঘটেছে ছোট ও বড়পর্দার অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার ক্ষেত্রে। গেল ৯ মে ছিল মা দিবস। এদিন নিজের মা ও বোনের সঙ্গে কেক কাটার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন ভাবনা। কিন্তু এই ছবিতেও হুমড়ি খেয়ে পড়েন কিছু লোক। নেতিবাচক মন্তব্য আসে একের পর এক।
এ নিয়ে ভাবনা বলেন, ‘আমার হাতা কাটা ব্লাউজ নিয়ে তাদের কথা। আমার মা কেন টিপ পড়লো। আমার মা হিন্দু। আমার মা হিন্দু হোক, আর মুসলিম হোক, তবে সে মানুষ। আমার মার ওড়না দেখা যাচ্ছে না কেন?? এরাই ধর্ষক। এরা অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর মাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তবে একটা জিনিস আজকে পরিষ্কার হলাম। আমাকে নিয়ে আমার কলিগরা কোনদিন কোন প্রতিবাদ করেননি। আমাকে প্রতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন হেয় করা হয়, তারা চুপ থেকেছেন। আজকে ভালো লাগছে যে, চঞ্চল ভাই এর জন্য হলেও তারা প্রতিবাদ করছে। কারণ প্রতিবাদ করাটা জরুরি। শিল্পীরা ইগনোর করে না, বয়কট করে না, তারা প্রতিবাদ করতে জানে। আমাদের মা-দেরকেও যারা বাজে বলতে ছাড়ে না, তাদের শাস্তি দেয়া হোক। সাইবার ক্রাইম প্লিজ। ’
ঘটনাটির পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেত্রী ভাবনা। তখন কেউ তার পাশে ছিল না। এমন সংকটকালে ভাবনা বিষয়টা জানান অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিমকে। সেলিম নিজ উদ্যোগে ভাবনাকে নিয়ে যান পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে। ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
যারা সাইবার বুলিং করেছিলেন তাদের মধ্যে একজন নাসিব রাহাতকে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রকাশ্যে আনা হয়। তিনি নিজের টাইমলাইনে ভিডিও বার্তা দিয়ে অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমা চান। ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমি মো. নাসিব রাহাত। আমি পড়াশোনা করি। মা দিবসে আশনা হাবিব ভাবনা তার মা, বোনকে নিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেন ফেসবুকে। সেখানে আমি ভাবনার পরিহিত পোশাক নিয়ে অশালীন মন্তব্য করি, যা করা আমার মোটেও উচিত হয়নি। এটি একটি সাইবার ক্রাইম অপরাধ। এ জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাইবার বুলিং থেকে বিরত থাকবেন। ’
পুলিশের পদক্ষেপের কারণে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ভাবনা। পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের পাশাপাশি বিশেষভাবে শহিদুজ্জামান সেলিমকেও ধন্যবাদ জানান ভাবনা।
রোববার (৩০ মে) নিজের ফেসবুক ওয়ালে ভাবনা লেখেন, ‘দুঃসময়ে আপনি আমার হাত ধরেছেন, সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন, আশ্বস্ত করেছেন, সাইবার ক্রাইম অফিসে নিয়ে গেছেন। আমি খুব একাকী হয়ে পড়েছিলাম। আমি যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম তা এই সমাজ ও সামাজিকমাধ্যম একটুও গুরুত্ব দেয়নি। কারণ এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ।
এরপর ভাবনা বলেন, ‘তবে আমি খুশি যে (অভিনয়শিল্পী সংঘের) সভাপতি হিসেবে আমাদের একজন সেলিম ভাই আছেন। তিনিই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত