শ্রীলঙ্কা কি বড় ভূমিকম্পের অপেক্ষায়?

  মহিউদ্দিন খান মোহন

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২২, ১২:৫৮ |  আপডেট  : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩০

বিশ্বের সবার দৃষ্টি এখন  দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার দিকে। গত মাসাধিককাল ধরে চলে আসা জনবিক্ষোভের পর হঠাৎ করে সেখানে সরকারের বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে নতুন দৃশ্যপটের। এ দৃশ্য ইতোপূর্বে কোথাও দেখা যায়নি। ঋণে জর্জরিত ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা এখন এক অরাজক রাষ্ট্র। সেখানে সরকার কার্যকারিতা হারিয়েছে অনেক আগেই। গণঅভূত্থানে সরকার পতনের অনেক নজির পৃথিবীতে আছে। কিন্তু পতনের মুখে শাসকদের এমন জনরোষে পতিত হওয়ার ঘটনা ইতোপূর্বে খুব কমই দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেও রেহাই পাননি। জনরোষ থেকে বাঁচতে তিনি এখন রাজধানী কলম্বো থেকে অনেক দূরে বিচ্ছিন্ন একটি এলাকায় অবস্থান করছেন। তার সরকারের মন্ত্রী, এমপি এবং দলীয় নেতারা রাজপথে গণপিটুনীর শিকার হয়েছেন। ক্ষুব্ধ জনতা জ্বালিয়ে দিয়েছে মাহিন্দা ও তার মন্ত্রীদের বাড়ি। সহিংস ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুজন এমপিসহ মোট নয়জন। সরকার দলীয় কোনো লোকজন যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য বিক্ষুব্ধ জনতা কলম্বোর আন্তার্জাতিক বিমানবন্দরের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে । সাধারণ মানুষের এই আন্দোলনের শেষ কোথায় গিয়ে থামবে  তা এখনও বলা যাচ্ছে না। যদিও মাহিন্দার ভাই গোটাবায়া রাজাপাকসে এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি পদে বহাল রয়েছেন। তবে বিক্ষোভকারীরা তারও পদত্যাগ দাবি করেছে। তার পদত্যাগের মধ্য দিয়েই রাজাপকসে সরকারের পতন চূড়ান্ত হতে পারে। 

দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রক্ষমতায় রয়েছে মাহিন্দা রাজাপাকসের দল শ্রীলঙ্কা পুদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি)। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় দেহে বিষফোঁড়ার মতো জেগে থাকা তামিল সমস্যার সমাধান করেছিলেন রাজাপাকসে। তামিল টাইগারদের দমন ও নিশ্চিহ্ন করে তিনি শ্রীলঙ্কার জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছিলেন। প্রথমে রাষ্ট্রপতি পরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তবে, গত কয়েক বছর ধরে চলমান অর্থনৈতিক মন্দা রাজাপাকসে সরকারকে বেশ বেকায়দায় রেখেছিল। অপরিকল্পিত উন্নয়ন ব্যয়সহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমে আসায় দেশটি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় তারা সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ হতে থাকে।


 
অন্যদিকে রাজাপাকসে সরকারের মধ্যে আত্মীয়করণ এবং তাদেরকে অবাধ লুটপাটে জনগণ প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ছিল। ব্যাপক দুর্নীতির ফলে রাজকোষ হয়ে পড়েছিল শূন্য। এরই মধ্যে জনগণ রাস্তায় নেমেছিল সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। তারা সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানাচ্ছিল শান্তিপূর্ণভাবেই। কিন্ত গত ৯ মে জনতার বিক্ষোভে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ জনতা সরকার দলীয় মন্ত্রী এমপি এবং নেতাদের ধরে ধরে ‘শায়েস্তা’ করতে থাকে। এমন কি সরকারের সমর্থক ও বন্দনাকারী সাংবাদিকরাও জনরোষ থেকে রেহাই পান নি। 

রাজাপাকসের সরকারের প্রতি সে দেশের জনসাধারণের এ্ রোষের কারণ কি? এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো যেসব খবর এ পর্যন্ত দিয়েছে, তাতে  পরিবারতন্ত্র, গণতন্ত্রের সংকট, দুর্নীতি আর অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে এসব ব্যাপার এক সময়ের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশটিকে একেবারে শেষ করে দিয়েছে। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত শ্রীলঙ্কায় গত মাসখানেক ধরেই গণবিক্ষোভ চলছিল। সে বিক্ষোভ ছিল আক্ষরিক অর্থেই গণবিক্ষোভ। কেননা, খাদ্য-জ্বালানিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য সংকটে হিমশিম খাওয়া জনগণ স্বেচ্ছায় রাজপথে নেমে এসেছিল। লক্ষণীয় হলো, এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার নেতৃত্বে হয়নি। যদিও রাজাপাকসের পদত্যগের পর বিরোধী দল থেকে বলা হয়েছে, তারা সরকার গঠন করতে প্রস্তুত। তবে তার আগে রাষ্ট্রপতি গোটাবায়াকে পদত্যাগ করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব না থাকার কারণে এই আন্দোলনের যবনিকাপাত এবং ফলাফল নিয়ে অনেকেই সংশয়ে রয়েছেন। রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া এখনও বহাল রয়েছেন। সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সহিংসতায় জড়িতদের দেখামাত্র গুলি করতে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেনাবাহিনী সে নির্দেশ পালনে আগ্রহ দেখায় নি। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে গত ১২ মে দেশের পত্রিকাগুলোর খবরে বলা হয়েছে, সেনাবাহনীর সদস্যদের উপস্থিতিতেই বিক্ষোভকারীরা তাদের সহিংসতা চালিয়েছে। রাজপথে সেনা সদস্যদের ভূমিকা অনেকটাই নমনীয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার পদত্যাগের মধ্য দিযেই শ্রীলঙ্কার বর্তমান সহিংস পরিস্থিতির অবসান হতে পারে।

প্রশ্ন উঠেছে, একদা দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধশালী দেশ শ্রীলঙ্কায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো কেন? অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এক সময় দেশটি ছিল বেশ শক্তিশালী। শিক্ষার হার নব্বই শতাংশেরও ওপরে। পর্যটন শিল্পও ছিল সমৃদ্ধ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকগণ বলছেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় কারণেই শ্রীলঙ্কায় এই বিপর্যয় নেমে এসেছে। সে সাথে রয়েছে রাজাপাকসে সরকারের একগুয়েমি। বিদ্যমান পরিস্থিতির বাস্তবতাকে আমলে না নিয়ে স্বেচ্ছাচরিতার মাধ্যমে সরকার পরিচালনা এবং জনগণের দৈনন্দিন চাহিদাকে আমলে না নিয়ে নিজেদের ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকা তাদের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটিয়েছে। সরকারের এহেন আচরণে জনগণর মনে যে ক্ষোভের অগ্নি দীর্ঘদিন থেকে ধূমায়িত হচ্ছিল, এখন তা ভয়ংকর দাবানলে রূপ নিয়েছে। রাজাপাকসে সরকার বিভিন্ন বিলাসী উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যে বিশাল অংকের বৈেিদশিক ঋণ নিয়েছিল, তা পরিশোধের সময় ঘনিয়ে এলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়। হাতে রয়েছে মাত্র পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার। এক সময় পোশাক রপ্তানিতে শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ এশিযার মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছিল। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে গৃহযুদ্ধের কারণে সে শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ক্রেতারা শ্রীলঙ্কা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। পরবর্তীতে দেশটি পোশাক শিল্প নিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেও আগের অবস্থান আর ফিরে পায়নি। তাছাড়া চা রপ্তানি ও পর্যটন শিল্প থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার কল্যাণে বেশ একটা স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত বৈদেশিক ঋণের বোঝা, রপ্তানি কমে যাওয়া, করোনা পরিস্থিতি এবং তা স্তিমিত হতে না হতেই রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শ্রীলঙ্কার জন্য গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দেয়। গত দুই বছরে দেশটি বলতে গেলে তেমন বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারেনি। করোনার কারণে পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তা আরো নিম্নগামী হয়। 

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার চা রফতানির পনের শতাংশ হয় রাশিয়ায়। পর্যটকদের একটি বড় অংশও আসে সে দেশ থেকে। ফলে ওই দেশ থেকে যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হতো তা এখন এক প্রকার বন্ধ। এসব কারণে শ্রীলঙ্কার বৈদিশক মুদ্রা তহবিলে যে টান পড়ে তার ধাক্কা গিয়ে লাগে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি খাতে। চরম খাদ্যাভাবের সাথে জ্বালানি সরবরাহ সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় বিদ্যুত সরবরাহেও দেখা দেয় চরম সংকট। এসব কারণে দেশটির জনসাধারণ সরকারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এর সাথে যুক্ত হয় রাজাপাকসের পরিবারের দুর্নীতি লুটপটের খবর। বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে সব বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে এই পরিবারের সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা ছিল ওপেন সিক্রেট। শ্রীলঙ্কার জনগণ দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করে, ক্ষমতাসীন রাজাপাকসে সরকার এবং ওই পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের কারণে দেশটির আজকের দৈন্যদশা সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি ছিল রাজাপাকসে সরকারের পদত্যাগ। আন্দোলন তাদের শান্তিপূর্ণই ছিল। কিন্তু মাহিন্দা রাজাপাকসের শক্তি দিয়ে বিক্ষোভ দমনের সিদ্ধান্ত পেট্রোলের পিপায় জলন্ত দিয়াশলাই নিক্ষেপের কাজ করে। যে কারণে তার পদত্যাগের পর বিক্ষোভকারীদের গণপিটুনির শিকার হন মন্ত্রী এমপি এবং বশংবদ সাংবাদিকরাও। 

এদিকে শ্রীলঙ্কার বিপর্যস্ত পরিস্থিতির কারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে চলছে নানা বিশ্লেষণ। সেগুলোর বেশিরভাগই এই পরিস্থিতি জন্য প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজপাকসের ভুল নীতি ও তার পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতাকে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।  যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ সম্প্রতি ‘এক পরিবারে ধ্বংস একটি দেশ’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদনে লিখেছে, মূলত শ্রীলঙ্কার এই বিপর্যয়ের জন্য রাজাপাকসে পররিবারই দায়ী। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত  মাহিন্দা রাজাপাকসে ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তার সময়ে তামিল টাইগারদের নির্মূল সম্ভব হয় এবং দেশটিতে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরে আসে। বর্তমানে তার ছোটভাই গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া তার ভাই বাসিল অর্থমন্ত্রী, চমল ছিলেন সেচমন্ত্রী। আর মাহিন্দার পুত্র নমল ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী। এ মুহূর্তে লঙ্কানদের একমাত্র দাবি পেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপকসের পদত্যাগ। তার পদত্যাগের মধ্য দিয়েই রাজাপাকসের পরিবারের দীর্ঘ দুই দশকের রাজত্বের অবসান হতে পারে। কলম্বোর ‘সেন্টার ফর পলিসি অল্টারনেটিভে’র নির্বাহী পরিচালক পাইকিয়াসোথি সারাভানামুত্তু মন্তব্য করেছেন, ‘কোনো কিছু ঘটার আগেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমাধান করতে হবে। প্রেসিডেন্ট (গোটাবায়া) এই মুহূর্তে একটি বিষাক্ত নাম’। 

একই কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার ‘সর্বদয়া শান্তি সেনা’ নামের একটি এনজিওর কর্মকর্তা পাসিন্দু পাথিরানা। গত ১১ মে সমকালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার পদত্যাগের পর এখন উত্তেজনা ও সহিংসতা কমে এলেও বর্তমান পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক বলার উপায় নেই। মাহিন্দার ভাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগই শ্রীলঙ্কানদের কাছে একমাত্র সমাধান। যদিও মাহিন্দার সমর্থকরা এ যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে যে, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। সে সুযোগে দেশটিতে সামরিক শাসনের অশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। তবে দেশটির আইনজীবীরা এই সমস্যার সমাধান খুঁজছেন সংবিধানের আলোকেই। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিশাসিত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করলে পার্লামেন্টের স্পিকার সে দায়িত্ব নেওয়ার কথা। কিন্তু স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ারদেনা রাজাপাকসে ভ্রাতৃদ্বয়ের অনুগত বিধায় আন্দোলনকারীদের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য বিকল্প নন। তবে সংবিধান অনুযায়ী এমপিরা একজন অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে পারবেন, যিনি পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু রাজাপাকসের দল অথবা বিরোধীদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে পরবর্তী সরকার গঠন নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা দেশটিকে আরো গভীর কোনো সংকটে নিপতিত করে কিনা সেটাও ভাববার বিষয়। পাসিনু পাথিরানা তার নিবন্ধে মন্তব্য করেছেন, ‘একটি ভূমিকম্পের পর যে বিধ্বস্ত অবস্থা তৈরি হয়; শ্রীলঙ্কা সে অবস্থায় রয়েছে। তবে প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে একটি ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের পূর্ব লক্ষণ। প্রেসিডেন্ট যেভাবে প্রাসাদে জিদ ধরে পড়ে আছেন; পদত্যাগ করতেই রাজী হচ্ছেন না, তাতে আন্দোলনকারীদের ধৈর্যের বাধ ভেঙে বড় ভূমিকম্পটি যে কোনো সময় শুরু হতে পারে।’ 

এদিকে ১২ মে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহ নাম। তার এ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কায় নতুন একটি সরকার গঠনের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হলো। হয়তো এই নিবন্ধটি প্রকাশিত হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। তবে তাতে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে,  নাকি আরও বড় কোনো ভূমিকম্পের কবলে পড়বে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

লেখকঃ সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত