শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে
প্রকাশ: ১২ মে ২০২২, ২০:৪৬ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫
অর্থনৈতিক সংকট ঘিরে সহিংস বিক্ষোভে টালমাটাল শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে তাঁকে শপথ পড়িয়েছেন। শ্রীলঙ্কাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে শপথের পর কলম্বোর ওয়ালুকরমা মন্দিরে আশির্বাদ নিতে গেছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। শ্রীলঙ্কার ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা রনিল এর আগেও পাঁচবার দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে মুখে পড়া শ্রীলঙ্কায় মাসখানেকের বেশি সময় ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। গত সোমবার সরকার সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ এবং দেশজুড়ে জ্বালাও–পোড়াওয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষে। জনরোষের মুখে কলম্বোর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে সেনা পাহারায় পালিয়ে একটি নৌঘাঁটিতে অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
এরপর বিক্ষোভ দমনে দেশজুড়ে কারফিউ জারির পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও পুলিশকে গুলি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ চলছিল।
প্রধান বিরোধী দল সমাজি জনা বালাভেগায়া (এসজেবি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে রাজি হলেও সেজন্য প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের শর্ত দিয়েছিল তারা। এরমধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে চলতি সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তারপরেও বিক্ষোভ চলছিল।
আজ সকালে ইউএনপির নেতারা জানান, তাদের নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। এরমধ্যে প্রধান বিরোধী দল এসজেবির নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাও প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি জানিয়ে প্রেসিডেন্টকে চিঠি লেখেন। তবে সেখানে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব এবং তাঁর দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করার শর্ত দিয়েছিলেন তিনি।
সাজিথ প্রেমাদাসার ওই চিঠির বিষয়ে আর কিছু জানা যায়নি। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি এখন শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত করতে পারবেন কি না তা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। ঋণের চাপ আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
গতকাল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নন্দলাল বিরাসিংহে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাঁদের হাতে বৈদেশিক মুদ্রার যে মজুত আছে, তা দিয়ে সপ্তাহখানেকের বেশি আমদানিপ্রক্রিয়া চালানো সম্ভব হবে না। সংকট কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ছাড়া সে আলোচনা এগোবে না।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত