শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২২, ১০:০০ |  আপডেট  : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২৩

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। ১৯৮১ সালে আজকের দিনে দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে তাঁর নির্বাসিত জীবনের ইতি ঘটে। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রায় ছয় বছর বিদেশে নির্বাসিত ছিলেন শেখ হাসিনা। দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। তাঁর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বিপথগামী সেনা সদস্যরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে। সেদিন বিদেশে অবস্থান করছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। খুনিচক্র চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে। স্বামীর কর্মস্থল জার্মানি থেকে ভারতে এসে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা।  

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিরা এ দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপরে নেমে আসে জুলুম-নির্যাতন। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দলের অনেক নেতাকর্মীও দিগ্ভ্রান্ত হয়ে পড়ে। বিভক্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এরপর দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শেখ হাসিনা। তত্কালীন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার শেখ হাসিনার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এর পরও ১৯৮১ সালের ১৭ মে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে বিমানযোগে কলকাতা হয়ে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।  

সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফেরার দিনে ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সারা দিন রাজধানীর অলিগলি থেকে মিছিল বের হতে থাকে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলানগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।  

দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন শেখ হাসিনা। শেরেবাংলানগরে লাখো জনতার উপস্থিতিতে আয়োজিত সংবর্ধনা গ্রহণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উত্সর্গ করতে চাই। ’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই। ’  

দেশে ফিরে সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালন শুরু করেন শেখ হাসিনা। এরপর দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। এখন পর্যন্ত চারবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। এখন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে।

 

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
আজ সারা দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ১১টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত