শালীনতা নারীর পোশাকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ কি না, প্রশ্ন শিক্ষামন্ত্রীর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২২, ২১:০১ |  আপডেট  : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৩০

শালীনতা নারীর পোশাকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি আরও বলেন, ‘শালীনতা কী? এটি কি শুধুই নারীর পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ? শালীনতা শুধু পোশাকের নয়। শালীনতা পোশাক, আচার-আচরণ, কাজ এমনকি দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা এসবেরও শালীনতা দরকার। সেটি শুধু নারীর ক্ষেত্রে নয়, পুরুষেরও। প্রত্যেকটি মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আজ যারা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। এসব থেকে সজাগ থাকতে হবে।’

বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয় বরং ধর্ম পালনে স্বাধীনতা বলে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমার ধর্ম আমার জাতীয়তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু নয়। আমার সংস্কৃতিকে কেন ছুঁড়ে ফেলার, নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়? আমার আবহমানকালের যে সংস্কৃতি, তা কেন নানান প্রশ্নে জর্জরিত করা হবে?’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করে দীপু মনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট শুধু একটি বাড়িতে নয়, ঢাকা শহরের কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মীয়-স্বজনদের সবাইকে কেন হত্যা করা হলো? তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? তারা মূলত শেখ মুজিবুর রহমানকে অসম্ভব ভয় পেতো। মুজিবের রক্তের কেউ যেন না থাকে, তাকে নির্বংশ করতে হবে। কেন এ লোকটিকে ভয় করে, কারা এই ঘাতক? বলা হয়, কতিপয় সামরিক বিপথগামী সেনা সদস্য। সত্যিই কী তাই? তারা তো শুধু ট্রিগার টিপেছিলে। আসল ঘাতক কারা? আসল ষড়যন্ত্রকারী কারা?’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব মোড়লদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশটাকে স্বাধীন করেছিলেন। তখনকার সাম্রাজ্যবাদীরা পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। গণহত্যাকে সমর্থন করেছে, অস্ত্র দিয়েছে। এমনকি আমাদের স্বাধীনতাকে ঠেকানোর জন্য সাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল।’

বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের দাবির বৈধতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এজন্য বিশ্ব মানবতা বাঙালিদের পক্ষে ছিল উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘এমনকি যে দেশ আমাদের বিপক্ষে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল, সেই দেশের জনগণও আমাদের পক্ষে ছিল। সেই বিশ্ব মোড়লদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সমগ্র পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে নিরস্ত্র বাঙালির সেদিন বিজয়ী হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন শোষিতের পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। শোষক ও শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন, তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছিলেন।’ এসময় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান দীপু মনি।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ।

অনুষ্ঠানে ঢাকা কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম মইনুল হোসেন, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, ঢাকার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত