শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য- বিচিত্র কুমার

  বিচিত্র কুমার

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:০৫ |  আপডেট  : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২৮

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য

বিচিত্র কুমার 

 

বেদনাবিধুর এক দিন ১৪ ডিসেম্বর,

যেন রক্তমাখা কালের দলিল,

মাটির প্রতিটি কণায় লেগে থাকা

স্বাধীনতার দামে কেনা নিঃশ্বাসের গন্ধ।

মৃত্যু আজ কবিতা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,

মেধার শিকড় টেনে নেওয়ার

এক নৃশংস উল্লাসের স্মৃতি নিয়ে।

 

তাদের দুঃস্বপ্ন ছিলো আমাদের স্বপ্নের ভিতর,

পাকিস্তানি শাসকের চোখে স্বপ্ন মানে ছিলো ভয়,

তাদের অস্ত্রের নীলচোখে বুদ্ধিজীবী ছিলো শত্রু,

মেধা ছিলো ধ্বংসের একমাত্র টার্গেট।

তারা জানত, বুদ্ধিজীবীর কলমে আছে আগুন,

যা বুলেটের চেয়েও ধারালো,

তারা জানত, চিন্তার আলো ছড়িয়ে যায়

তন্দ্রাহীন রাতে, যেখানে স্বপ্নেরা বিদ্রোহ করে।

 

সেই রাতে, রায়েরবাজারের কাদামাটিতে,

মিরপুরের রক্তস্রোতে

যেন ফুঁসে উঠেছিলো নির্ভীক প্রাণগুলো,

তাদের রক্তে লেখা হলো ইতিহাস।

বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেলো যাদের,

তারা কি জানত, এই মাটি

তাদের স্মৃতি জড়াবে এভাবে?

তারা কি জানত, একদিন

বাংলার প্রতিটি শিশুর মুখে থাকবে তাদের নাম,

তারা ভাঙবে না, মিশবে না ধূলায়?

 

রায়েরবাজারের কুয়াশা হয়ে ওঠে

তাদের শ্বাসের শেষ ছায়া,

মিরপুরের বধ্যভূমির প্রতিটি লাল ফোঁটা

আজও বলে, "আমরা ছিলাম, আমরা আছি।"

তাদের চোখের মায়া, কথার জ্যোতি,

আজও আকাশ ছুঁয়ে দেয়,

তারা ছিলো মাটির বাতিঘর,

তারা ছিলো জাতির মননশীলতার প্রহরী।

 

১৪ ডিসেম্বর শুধু শোক নয়,

এ দিন প্রতিজ্ঞার, জেগে ওঠার দিন।

আমরা কি তাদের রক্তকে ভুলে যাবো?

আমরা কি ঋণশোধে ব্যর্থ হবো?

না, তাদের আদর্শ হবে আমাদের পথের প্রদীপ,

তাদের স্বপ্ন হবে আমাদের মানচিত্র।

আমরা মেধার প্রদীপ জ্বালাবো,

আমরা আরেকটি বধ্যভূমির জন্ম হতে দেবো না।

 

তোমরা যারা শহীদ,

তোমাদের রক্তে রাঙা হয়েছে বাংলার সত্তা।

তোমাদের আত্মা ছড়িয়ে পড়েছে

চিন্তার প্রতিটি কোণে।

তোমরা আছো, থাকবে,

আমাদের প্রতিটি শ্বাসে, প্রতিটি স্বপ্নে।

 

১৪ ডিসেম্বর –

একদিকে শোকের চাদরে মোড়া,

অন্যদিকে সংগ্রামের অগ্নিশিখায় প্রজ্জ্বলিত।

আমরা তোমাদের ভুলবো না।

আমাদের শপথ, তোমাদের স্বপ্নের

বাংলাদেশ গড়তে জীবন উৎসর্গ করবো।

তোমাদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা,

তোমাদের পথেই জাতি হবে এক,

তোমাদের দেখানো আলোয়

সোনার বাংলা একদিন নতুন সূর্য দেখবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত