লৌহজংয়ে পদ্মার রুদ্রমূর্তি ধারন, ৩দিনে ৭০টি বসতঘর নদী গর্ভে বিলীন 

  ছালমা আক্তার, লৌহজং(মুন্সিগঞ্জ)প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১৯:৫১ |  আপডেট  : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৯

রিমেলের প্রভাবে পদ্মা নদীর উত্তাল ঢেউ জোয়ারে পানি বৃদ্ধি তীব্র স্রোত আর নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট উত্তাল ঢেউ আচরে পরায় গত তিন দিনে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে প্রায় ৭০টি বসত ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসি, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন ।

বর্ষার শুরুতেই পদ্মা কম বেশি ভাঙন দেখা দিলেও গত ৩ দিন যাবত পদ্মা রুদ্রমূর্তি ধারন করেছে । বর্তমানে ভাঙ্গনে বেশি উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়ন, বেজগাঁও ইউনিয়ন, লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন ও কনকসার ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ শিকার হয়েছে ।

গাঁওদিয়া ইউনিয়নের মেম্বার মো. রশিদ শিকদার জানান, রিমেলের প্রভাবে পদ্মা নদী হঠাৎ ফুসে উঠেছে । সোমবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত তিন দিনে পদ্মার ভাঙ্গনে শুধু গাওদিয়া ইউনিয়নের হারিদিয়া গ্রামে অর্ধশতাধিক বসত ঘর পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে যায় । অসময়ে পদ্মার হঠাৎ ভাঙ্গনের কবলে পরে দিশেহারা হয়ে পরেছে পদ্মার তীরবর্তী এলাকাবাসি । বসত ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় অর্ধশতাধিক পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গত তিনদিন ধরে স্থানীয় মেম্বার ও এলাকাবাসির সহযোগিতায় ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থদের দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে । অপর দিকে লৌহজং-তেউটিয়া, বেজগাঁও ও কনকসার ইউনিয়নের আরোও ২০ টি বসত ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় । পদ্মার প্রবল স্রোত আর উত্তাল ঢেউয়ের কারনে পদ্মার প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন দেখা দেয় ।

লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, বছর জুড়ে পদ্মার কমবেশি ভাঙ্গন চলছে । তবে স্থানীয় এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি চারশ’ ৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ আনেন মন্ত্রনালয় থেকে । কাজের ধীরগতি ও অপরিকল্পিত ভাবে জিও ব্যাগ ও ব্লক ফালানোর কারণে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না । 

এদিকে গত বুধবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদ্দুজামান, মুন্সিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের  নির্বাহী প্রকৌশলী তহিদূল ইসলাম, লৌহজং উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বি.এম শোয়েব, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গনি তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন, পদ্মার ভাঙ্গন ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন ।

উপস্থিত এলাকাবাসি ও সাংবাদিকদের  প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, চলমান কাজের ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। তবে আপতকালীন সময়ের জন্য জরুরী ভিত্তিতে ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে পদ্মায় ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলার জন্য ।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) পদ্মার ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি । তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দ্রুত কাজ সম্পুর্ন করার নির্দেশ দেন ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত