লকডাউনে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরেও সড়কে ঝরেছে ৭৮০৯ প্রাণ
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:২৭ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৪
লকডাউনে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরও, ২০২১ সালে সড়কে দুর্ঘটনা হয়েছে ৫ হাজার ৬শ ২৯টি। এতে নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৮শ ৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটের সাগর-রুনী মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি জানান, এ সময়ে সড়ক-রেল ও নৌ মিলিয়ে, ৬ হাজার ২শ ১৩ দুর্ঘটনা ঘটে। মারা যান ৮ হাজার ৫শ ১৬ জন। আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে, মহাসড়কে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পায় ২ দশমিক পাঁচ আট শতাংশ। এতে বার্ষিক ক্ষতি জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলন থেকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়—
১. বেপরোয়া গতি।
২. বিপদজনক অভারটেকিং।
৩. রাস্তাঘাটের ত্রুটি।
৪. ফিটনেসবিহীন যানবাহন।
৫. যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা।
৬. চালকের অদক্ষতা।
৭. চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার।
৮. মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো।
৯. রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা।
১০. রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা।
১১. ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ।
১২. ছোট যানবাহন বৃদ্ধি।
১৩. সড়কে চাঁদাবাজি।
১৪. রাস্তার পাশে হাট-বাজার।
১৫. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো এবং দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে টুকটুকি, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা নির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেপরোয়াভাবে বাড়ছে।
দুর্ঘটনা কমাতে ১২ দফা সুপারিশ করেছে যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
সুপারিশগুলো হচ্ছে—
১. সড়ক নিরাপত্তায় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করা।
২. আইনের ত্রুটি চিহ্নিত করে সংস্কারপূর্বক ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।
৩. সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো, সড়ক মন্ত্রণালয়ে আলাদা সড়ক নিরাপত্তা ইউনিট গঠন।
৪. সড়ক নিরাপত্তায় ইতোমধ্যে প্রণীত যাবতীয় সুপারিশমালা বাস্তবায়ন উদ্যোগ নেওয়া।
৫. দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা।
৬. জেব্রা ক্রসিং অংকন করা।
৭. গণপরিবহন চালকদের পেশাদার ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
৮. সড়ক পরিবহন সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা।
৯. গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা।
১০. সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠনপূর্বক হতাহতদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
১১. দেশব্যাপী চাহিদানুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন পরিবহন নামানোর উদ্যোগ নেওয়া।
১২. ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তোলা এবং গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের সব মন্ত্রী, সংসদ সদস্য সচিব, জেলা প্রশাসকদের প্রতি মাসে একদিন পরিচয় গোপন রেখে গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত