রূপালী গিটার ফেলে চলে গিয়েছেন তিনি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ১১:২৯ |  আপডেট  : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:৪৫

অবশেষে আইয়ুব বাচ্চুর প্রয়াণের চার বছর পর তার ইচ্ছা পূর্ণতা পাচ্ছে। গানটি গেয়েছেন তরুণ গায়ক বিজয় মামুন। সুর-সংগীতও তারই। এবি’র চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী [১৮ অক্টোবর] উপলক্ষে তাকে উৎসর্গ করে সোমবার [১৭ অক্টোবর] রাতে প্রকাশ পেয়েছে বাপ্পী খানের লেখা এই বিশেষ গানটি। যার নাম ‘আমার ডায়েরিটাতে’।

বাপ্পী খান জানান, আইয়ুব বাচ্চুর নির্দেশনায় এই গানটি তিনি রচনা করেছেন ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। তার ঠিক ৭ মাসের মাথায় ১৮ অক্টোবর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই গিটার কিংবদন্তি।

আইয়ুব বাচ্চু [১৬ আগস্ট ১৯৬২ – ১৮ অক্টোবর ২০১৮] একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক-গীতিকার এবং গীটারবাদক ছিলেন। তিনি রক ব্যান্ড এল আর বি এর গায়ক ও গীটারবাদক হিসেবে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তাকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতের ধারায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী এবং গীটারবাদক বলা হয়। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধীন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন।

বাচ্চু চট্টগ্রামে ১৯৭৬ সালে কলেজ জীবনে "আগলি বয়েজ" নামক ব্যান্ড গঠনের মাধ্যমে তার সঙ্গীত জীবনের সূচনা করেছিল। ১৯৭৭ সালে তিনি "ফিলিংস" [বর্তমানে "নগর বাউল" নামে পরিচিত] এ যোগদান করেন এবং ব্যান্ডটির সাথে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাজ করেছিলেন। একই বছরে তিনি জনপ্রিয় রক ব্যান্ড সোলস-এর প্রধান গীটারবাদক হিসেবে যোগদান করেন। সোলসের সঙ্গে তিনি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত, সুপার সোলস [১৯৮২], কলেজের করিডোরে [১৯৮৫], মানুষ মাটির কাছাকাছি [১৯৮৭] এবং ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট [১৯৮৮] চারটি অ্যালবামে কাজ করেছিল। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল তিনি তার নিজের ব্যান্ড লিটল রিভার ব্যান্ড গঠন করে, যা পরবর্তীকালে লাভ রান্স ব্লাইন্ড নামে বা সংক্ষেপে এল আর বি নামে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি তার মৃত্যু অবধি ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৭ বছর ধরে ব্যান্ডটির সঙ্গে ছিলেন। একজন একক শিল্পী হিসেবেও তিনি সফলতা পেয়েছিল। তার প্রথম একক অ্যালবাম রক্ত গোলাপ, যা ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় অ্যালবাম ময়না [১৯৮৮] দিয়ে, তিনি তার একক কর্মজীবনের সফলতা অর্জন করেন এবং পরে কষ্ট [১৯৯৫] অ্যালবামটি প্রকাশ করেন, যা প্রচুর সফলতা অর্জন করে। ২০০৭ সালে তিনি দেশের প্রথম বাদ্যযন্ত্রগত অ্যালবাম সাউন্ড অফ সাইলেন্স প্রকাশ করেন।

বাচ্চু এল আর বি'র সাথে এবং একজন একক শিল্পী হিসেবে প্রচুর অ্যালবাম বিক্রয় করেছেন। বাচ্চু বাংলাদেশে একজন অন্যতম সেরা গীটারবাদরক এবং অন্যতম প্রভাবশালী গীটারবাদক। এল আর বি'র সাথে সে ছয়টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার এবং একটি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন। ২০০৪ সালে বাচসাস পুরস্কার জিতেছিলেন সেরা পুরুষ ভোকাল বিভাগে। ২০১৭ সালে সে টেলে সিনে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার জিতেছিলেন।

বাচ্চু তার বান্ধবী ফেরদৌস চন্দনা'কে বিয়ে করেছিলেন ১৯৯১ সালের ৩১শে জানুয়ারিতে। তাদের দু'টি সন্তান আছে। মেয়ে ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব এবং ছেলে আহনাফ তাজওযার আইয়ুব। ছয় বছর ধরে ফুসফুসে পানি জমার অসুস্থতায় ভোগার পর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকায় তার নিজ বাসভবনে মারা যান। মৃত্যুর দুইদিন আগে তিনি রংপুরে তার শেষ কনসার্ট করেন।

তাকে চট্টগ্রামের চৈতন্য গলি'তে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে, তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত