রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি করবে না: তৌফিক-ই-ইলাহী
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২২, ১৪:৪৩ | আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি করবে না বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী (বীরবিক্রম)। সম্প্রতি জ্বালানি তেল আমদানি নিয়ে যে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৩১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
গত সপ্তাহে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক থেকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি সম্ভব নয়।সরকারের ওই বৈঠকের এক সপ্তাহ না পেরোতেই জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা এমন কথা বললেন।
সংবাদ সম্মেলনে তৌকিফ ই ইলাহী বলেন, ‘খাদ্যপণ্য, সার ও জ্বালানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি। তাই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করলে ওয়াশিংটনের আপত্তি থাকার কথা নয়। কাজেই আমি তার কথা ধরে বলছি, বাংলাদেশের আমদানির ক্ষেত্রে আপত্তি থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কিছু কূটনৈতিক শিষ্টাচার (ডিপলোমেটিক নরমস) থাকে। কিন্তু সরলভাবে আমি যেটা বুঝি, একজন মন্ত্রী পর্যায়ে যখন এটা বলা হলো, তার একটি গুরুত্ব রয়েছে।’
জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজার এমন অস্থিতিশীল যে আগামী সময়ে দেশে কবে কত টাকা দাম কমবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না।’ রাশিয়া থেকে তেল আসলেই রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটি তিনি মনে করেন না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জ্বালানির দাম কমে গেলে আমাদের আর কোনও সমস্যাই থাকতো না। এখন যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা মূলত জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে। এখন আমাদের দেশে ২০০৯ সালের তুলনায় চারগুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এ সংকটের মধ্যে থেকেও আমরা এটা করতে পেরেছি— এটা কম কথা নয়। জ্বালানি সংকটের সমাধানে আমরা দেশীয় জ্বালানির উৎপাদন বাড়াতে গত ৫ বছরে ৩৪টি কূপ খনন করেছি। গত বছরই আমরা চারটি কূপ খনন করেছি। বাংলাদেশে অনুসন্ধান হয়নি এই যে কথা বলা হয়, এটা ঠিক না।
তিনি বলেন, ‘দেশের স্থলভাগে আমরা বাপেক্স ছাড়া আর কাউকে অনুসন্ধান কাজ করতে দিচ্ছি না। যদিও ভোলায় এই বিধিনিষেধের মধ্যেই গ্যাজপ্রমকে কাজ দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে আইওসিকে কাজ দিচ্ছি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি না।’
তৌফিক ই ইলাহী তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, ‘আমরা যদি জ্বালানি তেলের দাম না বাড়াই তাহলে বাজেট থেকে ভর্তুকি দিতে হয়। এই টাকাতো বাজেট থেকে দিতে হয়। এটা হলেও মূল্যস্ফীতি বাড়ে। তিনি মনে করেন দাম বাড়লে যে ভর্তুকি দিতে হবে তাতেও স্ফীতি বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আইএমএফ এর মালিকও। কারণ আমরা আইএমএফ এর শেয়ার হোল্ডার বা অংশিদার। কাজেই আমরা আইএমএফ এর কাছ থেকে ঋণ নিতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো অর্থ আছে। আমি গতকাল শুনছিলাম রিজার্ভ বাড়বে। এটা একটি বৈশ্বিক সংকট। এই সংকট কবে সমাধান হবে, এটা কেউ বলতে পারে না।’
বিদ্যুতের সংকট আগামী সেপ্টেম্বর অক্টোবরের মধ্যে কেটে যাবে বলে আশা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি সচিব মো. মাহবুব হোসেন ছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত