রমজানের প্রথম জুমায় করোনা থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৩২ |  আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম জুমার নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে এই দোয়া করা হয়। বায়তুল মোকাররমে মোনাজাত পরিচালনা করেন পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।

মোনাজাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের আরোগ্য কামনা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে যারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য দান করার জন্য আল্লাহ কাছে প্রার্থনা করা হয়।

এর আগে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, যারা মসজিদে জামাতে নামাজ পড়তে ইচ্ছুক তারা যেন সুন্নত নামাজ বাসায় আদায় করে মসজিদে আসেন। জুমার নামাজ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে মসজিদে ঢুকবেন। মুখে মাস্ক পরবেন। মসজিদে এসে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে বসবেন।

তবে সরকারি বিধিনিষেধের কারণে মসজিদে মুসল্লি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। এসব মসজিদে খুতবাসহ নামাজের সময়ও সীমিত করা হয়েছে।

নামাজ শেষে মোফাজল হোসাইন নামের এক মুসল্লি বলেন, সারা বিশ্বের মানুষ আজ করোনা মহামারির আতঙ্কে। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দোয়া করেছি, যেন করোনাভাইরাস থেকে আল্লাহ মুক্তি দেন।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় হয়েছে। মুসুল্লিরা তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করেছেন। নামাজের আগে মসজিদ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয় বলে মসজিদ থেকে জানানো হয়েছে। যেসব মসল্লির মুখে মাস্ক ছিল না তাদের মসজিদ থেকে মাস্ক দেওয়া হয়। তবে মুসল্লিদের মসজিদে হ্যান্ড স্যানিটাইজার করতে দেখা যায়নি। মসজিদের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়নি। 

সর্তক অবস্থানে ছিল পুলিশ
গত কয়েক সপ্তাহে বায়তুল মোকাররম থেকে হেফাজত ইসলামের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অশান্ত পরিবেশ তৈরি হয়। এ প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে মসজিদের আশপাশে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত কয়েক ধাপে পুলিশকে সর্তক অবস্থানে দেখা যায়। এছাড়াও সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন। তবে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই জুমার নামাজ শেষ হয়েছে। 

স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না অন্যান্য মসজিদে
রাজধানীর পশ্চিম মেরুল বাড্ডা জামে মসজিদে ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই। সবাই মাস্ক পড়ে এলেও ছিল না সামাজিক দূরত্ব। দুপুর পৌনে একটায় মসজিদটিতে জুমার নামাজ শুরু হলেও একটার আগেই ভেতরে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। অবশেষে মসজিদের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে মানুষ নামাজ আদায় করে।

নামাজ পড়তে আসা তবিবুর রহমান নামক একজনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, রমজানের প্রথম জুমার নামাজটা মসজিদে না পড়লে আসলে হয় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করেছি, মাস্ক পড়ে এসেছি। বাকি সবাইকেও দেখলাম মাস্ক পড়ে এসেছে।

রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদরাসা কমপ্লেক্স মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। মুসল্লি বেশি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে মুসল্লিরা রাস্তায় এসে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করেন। 

রাজধানীর আরও কয়েকটি মসজিদে ঘুরে এরকম চিত্র দেখা গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল মুসল্লিদের চাপে সেটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে মসজিদের ইমাম ও কমিটি জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত