রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, লেবুর হালি ৮০ টাকা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২ এপ্রিল ২০২১, ১১:৩৫ |  আপডেট  : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮

সপ্তাহের বাজার করতে গুদারাঘাট সংলগ্ন কাঁচা বাজারে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন। সব পণ্যের বাড়তি দাম দেখে হতাশ তিনি। এতো দাম দিয়ে পুরো সপ্তাহের বাজার করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি। অবশেষে মাত্র দুই তিন দিনের বাজার করেই বাড়ি ফেরেন আনোয়ার।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে সব কিছুর এতো দাম যে পুরো সপ্তাহের বাজার না করে মাত্র দুতিন দিনের জন্য বাজার করলাম। দাম কমলে আবারও বাজার করবো। সবচেয়ে বেশি অবাক হলাম লেবু কিনতে গিয়ে। এক হালি লেবুর দাম ৮০ টাকা! তারমানে একটি লেবুর দাম ২০ টাকা পড়ছে। লেবুর দামই যদি এতো বেশি হয় তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ আর লেবু কিনতে পারবে না। আর মাছ, মাংস, চাল, তেল এসবের কথা তো বাদই দিলাম। 

লেবুর দামের বিষয়ে কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে লেবুর দাম উঠেছিল ১০০ টাকায়। আজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা হালি। আসলে বাজারে লেবু কম। তাই দাম বেশি। আমাদেরও পাইকারি বাজারে বেশি দামে লেবু কিনতে হচ্ছে। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি লেবু প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। হালি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। তবে কাগজি লেবুর দাম তুলনামূলক কম। এ জাতের লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। 

মানির হোসেন বলেন, আগে প্রতিদিন ২০০ পিস লেবু আনতাম, সব বিক্রি হয়ে যেতো। এখন দাম বেশি থাকায় মাত্র দুই ডজন আনি। তাও সারাদিনে বিক্রি হয় না।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডার বড় বাজারে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নিয়ামত আলী। তিনি বাজার পরিস্থিতি দেখে বলেন, আমাদের মত সাধারণ মানুষ খেয়ে বাঁচতে পারবে না। এতো দাম দিয়ে নিত্যপণ্য কেনা সম্ভব? আর যারা গরিব তাদের অবস্থা তো আরও খারাপ।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান বলেন, আসলে সব পণ্যের দামই বাড়তি। আমারা পাইকারি বাজারে সব কিছু বাড়তি দামে কিনছি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাড়তি দামের কারণে মানুষ এখন অল্প করে বাজার করছে।  তাই আমাদের ব্যবসাও খারাপ যাচ্ছে। 

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ নিত্যপণ্যই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। আজ খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮৫০ ও গরুর মাংস ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ১৭০ টাকায়। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। এছাড়া রুই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। কাতল মাছের দামও একই রকম। পাশাপাশি চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৫৮০ ও পাঙ্গাশ ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ইলিশ প্রতি কেজি (এক কেজি ওজনের) বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। এক কেজির কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজিতে। ডিম প্রতি ডজন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আজ। 

বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও বোতলজাত সোয়াবিন তেল ১৪০ টাকা প্রতি লিটার। এছাড়া খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

কাঁচাবাজারের মধ্যে শসা প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, পটল ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা ও আলু প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত