মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া আলোচিত যারা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৩ |  আপডেট  : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করছে নির্বাচন কমিশন। গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া আগামীকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে। জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই যাচাই-বাছাই চলছে। আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) দেশের বিভিন্ন আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

আজ মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আলোচিত প্রার্থী রয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করা বর্তমান সংসদ সদস্য, আলোচিত তারকাপ্রার্থীসহ বেশ কয়েকজনের প্রার্থিতা বাতিলের খবর পাওয়া গেছে।

তবে প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থিতা বাতিল হলেও তাদের নির্বাচন কমিশনে আপিলের সুযোগ থাকবে। এমনকি সেখানেও বাদ পড়লে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে। এজন্য যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা সবাই প্রত্যাশা করছেন আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন।  

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া আলোচিত যারা

গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান নোয়াখালী-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তার প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. আবু সুফিয়ান খান বলেন, আমাদের প্রার্থীর সব মামলা স্থগিত এবং ঋণ হালনাগাদ রয়েছে। মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা হবে।

মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে অংশ নিতে মনোয়নপত্র জমা দিলেও যাচাই-বাছাইতে বাতিল হয়ে গেছে বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র। ঋলখেলাপির অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

মাহি বি চৌধুরী মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে।

বিকল্পধারার দুই নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান ও মাহি বি চৌধুরী সম্পর্কে শ্বশুর জামাতা। এছাড়া তারা দুজনই বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে। তিনি রাজশাহী-১ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এক শতাংশ ভোটার জালিয়াতির (ভুয়া স্বাক্ষর) অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রাজশাহী নির্বাচন কমিশন অফিস।

মাহিয়া মাহি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করতে দুটি আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে আলোচিত প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের। তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন। রোববার সকালে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা।  

ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের আলোচিত প্রার্থী বিএনপির সাবেক নেতা মেজর (অব.) শাহজাহান ওমরের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হলেও একই আসনে বাতিল করা হয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা বজলুল হক হারুনের মনোনয়নপত্র। তিনি আগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন।  

রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ঝালকাঠির দুটি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। পরে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারাহ গুল নিঝুম দুটি আসনের সাতজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘোষণা দেন। এই আসন থেকে মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে আটজনের।

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। মনোনয়নপত্রের সাথে যুক্ত করা হলফনামায় মামলা ও ঋণের তথ্য না দেওয়ায়, তথ্য গোপন করার কারণ উল্লেখ করে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। একই আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের শরিক ইবরাহিম সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন ত্যাগ করে ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

ফরিদপুর-১ আসনের সাতজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা দুজনই আলোচিত প্রার্থী। তারা হলেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন। হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় কৃকের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। আর ফরমে মনোনীত প্রার্থীর ঘর ফাঁকা থাকায় বাতিল করা হয় দোলনের প্রার্থিতা।

 ঋণ খেলাপির অভিযোগে নোয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরণের মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

খেলাপি ঋণের দায়ে পাবনা-২ (বেড়া-সুজানগর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত খেলাপি ঋণের কারণে রোববার সকালে মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত