ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে বাঁচার উপায়, করোনাকালে আরেক মরনব্যধি
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১, ১৯:৪০ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:০৫
বিজ্ঞানসম্মত নাম মিউকরমাইকোসিস। ছত্রাক জাতীয় এক ধরনের সংক্রমণ। আগেও হতো। এখন করোনামুক্ত (পোস্ট কোভিড) রোগীদের ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বিশেষত, যে সব রোগী কোভিড চিকিৎসার সময় প্রচুর স্টেরয়েড পেয়েছেন এবং সুগারে আক্রান্ত, তাঁদের একাংশের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। এইমস ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। মহারাষ্ট্রে করোনাকালে এই রোগকে ঘিরে আতঙ্ক বেড়েছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই ওই রাজ্যে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজস্থানে আক্রান্ত একশো’র বেশি মানুষ। সে রাজ্যের সরকার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। জয়পুরের সোয়াই মান সিং হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রামিতদের চিকিৎসায় আলাদা ওয়ার্ড চালু হয়েছে।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
১. যেসব ডায়াবেটিস রোগীর সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
২. ইমিউনোসাপ্রেসেন্ট বা ক্যান্সারের চিকিত্সা চলছে যাঁদের বা দীর্ঘদিন যাঁরা কোনও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।
৩. যাঁরা হাই ডোজের স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দীর্ঘকাল খাচ্ছেন।
৪. করোনা আক্রান্তদের অনেককে মাস্ক বা ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। এমন রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এইসব রোগীদের নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিশেষত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের এক্ষেত্রে আলাদা করে সজাগ দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দিয়েছে এইমস।
সংক্রমণ বুঝবেন কী করে?
১. নাক থেকে অস্বাভাবিক কালো রঙের তরল বা রক্ত ঝরতে পারে।
২. নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা তৈরি হওয়া। মাথাব্যাথা বা চোখে ব্যাথা, চোখের চারদিকে ফোলাভাব, একই জিনিসের দ্বিতীয় প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠা, চোখে লালচে ভাব, দৃষ্টিশক্তি হারানো, চোখ বন্ধ করতে অসুবিধা হওয়া, চোখ খোলার ক্ষেত্রে সমস্যা— এসবই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রামিত হওয়ার লক্ষ্মণ।
৩. মুখমণ্ডলে অসাড়তা এলেও সাবধান হতে হবে।
৪. মুখ খুলতে সমস্যা বা চিবিয়ে খেতে গেলে অসুবিধা হতে পারে।
৫. নাক, গাল, চোখের চারপাশ কালো হয়ে যাওয়া বা ফ্যাকাসে হয়ে গেলে বা ব্যাথা হলে সতর্ক হতে হবে।
৬. দাঁতের পাটি আলগা অনুভব করলেও সতর্ক হতে হবে। মুখের মধ্যে কালো ছোপ তৈরি হতে পারে। মুখ, হাতের তালু, দাঁত বা নাকের ভিতরেও ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
বাঁচার উপায় কী?
১. উপরোক্ত কোনও লক্ষ্মণ দেখা দিলে ইএনটি, চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা অন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৩. নিজে থেকে স্টেরয়েড বা অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল জাতীয় কোনও ওষুধ খাওয়া চলবে না।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত