বিএসপিএ এই পুরস্কার দিয়েছে ব্যক্তি সাকিব কিংবা ব্যক্তি সালাউদ্দিনকে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৩৩ |  আপডেট  : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২২

বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ১০ ক্রীড়াবিদ নির্বাচন করেছে ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ)। এতে এক নম্বর ক্রীড়াবিদ নির্বাচত হন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় হয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য ও বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

গত শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার গ্রহণ করার করেন কাজী সালাউদ্দিন। কিন্তু পরের দিন তার এ পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের কথা জানায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

বিএসপিএ এই পুরস্কার দিয়েছে ব্যক্তি সাকিব কিংবা ব্যক্তি সালাউদ্দিনকে। কিন্তু সালাউদ্দিন এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এ নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল শনিবার পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে বাফুফের নির্বাহী কমিটির এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বাফুফে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানেই সালাউদ্দিনের পুরস্কার ও সম্মাননা প্রত্যাখ্যানের কথা জানানো হয়।

বাফুফের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির ষষ্ঠ নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের কাজী মো. সালাউদ্দিনকে প্রদত্ত দ্বিতীয় সেরা ক্রীড়াবিদ পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’

এতে আরও বলা হয়, ‘সালাউদ্দিনের মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, যিনি কি না একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন, তাকে দ্বিতীয় সেরা ক্রীড়াবিদের পুরস্কার দেওয়াটা প্রহসনের শামিল। এটা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে অবমাননা এবং একই সঙ্গে ক্রীড়াঙ্গন তথা ফুটবলসংশ্লিষ্ট সবার জন্য অবমাননাকর।’

কাজী সালাউদ্দিনের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএসপিএ জানায়, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) সংগঠনের ৬০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ১০ ক্রীড়াবিদকে বাছাই করে পুরস্কৃত করেছে এবং সম্মাননা দিয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন ‘দ্বিতীয় সেরা’র পুরস্কার নিয়ে স্পোর্টসম্যান স্পিরিট দেখিয়েছেন। কিন্তু পরদিন এক চিঠিতে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ‘দ্বিতীয় সেরা’র পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের কথা জানানো হয় বিএসপিকে। একই সঙ্গে ট্রফি ও পুরস্কারের অর্থ ফেরত দেয় বাফুফে। তাদের চিঠি অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাফুফের গতকালের নির্বাহী কমিটির সভায়।

বিএসপিএ পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানিয়েছে সাবেক ফুটবল সুপারস্টার কাজী সালাউদ্দিনকে। এই সম্মাননা তার খেলোয়াড়-জীবনের কীর্তির জন্য। কিন্তু ব্যক্তির পুরস্কার কী করে বাফুফের নির্বাহী কমিটির বিষয় হয়ে ওঠে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। বাফুফের চিঠিতে এটাকে “প্রহসনের পুরস্কার” বলা হয়েছে, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। প্রথমত, বাফুফে এর কোনো অংশ নয়। দ্বিতীয়ত, প্রহসনের পুরস্কার বললে বাকি পুরস্কারপ্রাপ্ত কীর্তিমানদের অসম্মান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিএসপিএ খুব আধুনিক, সুন্দর ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সেরা দশ ক্রীড়াবিদকে বাছাই করেছে। এটা আমাদের জন্য নতুন হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খুবই প্রচলিত সংস্কৃতি। বিএসপিএ অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে কাজটা করেছে এবং ক্রীড়াঙ্গনের সেরাদের সম্মান জানাতে পেরে খুশি। আর ক্রীড়াবিদদের পুরস্কৃত করা ও সম্মান জানানোর ধারা বিএসপিএর অনেক পুরোনো। সেই ১৯৬৪ সাল থেকে বর্ষসেরা ক্রীড়া পুরস্কার দিয়ে আসছে এবং এটা ক্রীড়াঙ্গনের সর্বপ্রথম, খুবই গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ বলেই বিবেচিত। এটাই আমাদের গর্ব।

সাকিব ও সালাউদ্দিনের পর বিএসপিএর দৃষ্টিতে ক্রমানুসারে বাংলাদেশের সর্বকালের আর আট ক্রীড়াবিদ দাবাড়ু নিয়াজ মোর্শেদ, ফুটবলার মোনেম মুন্না, বক্সার মোশাররফ হোসেন, ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা, শুটার আসিফ হোসেন খান, স্প্রিন্টার শাহ আলম, সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খান ও গলফার সিদ্দিকুর রহমান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত