বাম গণতান্ত্রিক জোটের হরতালে রাজধানীতে তীব্র যানজট

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২২, ০৯:৫৫ |  আপডেট  : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:০৫

টায়ার জ্বালিয়ে ও রাস্তার পাশের ব্যানার-পোস্টারে অগ্নিসংযোগ করে ব্যারিকেড তৈরির মাধ্যমে আজ সোমবার সকাল থেকে শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সকাল পৌনে সাতটার দিকে তাঁরা এ এলাকার সব রাস্তা বন্ধ করে দেন। সকালে সড়কে যান বাহনের চাপ থাকায় সায়েন্সল্যাব থেকে শাহবাগ সড়কে (বিএসএমএমইউ-জাতীয় জাদুঘরের মধ্যবর্তী সড়ক) দীর্ঘ যানজট লেগে গেছে।

এদিকে হরতালের মধ্যেই রাজধানীতে যানজট।সকালে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্করে এমন চিত্র দেখা যায়। সকাল থেকেই অফিসগামী ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তানভীর আলম বলেন, হরতালটা যুক্তি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দাম নিয়ন্ত্রণে দাবিতে হরতাল ডেকেছে বাম দল। কিন্তু আমাদের অফিস যেতে হবে আমরা চাকরিজীবী মানুষ। মধ্যবিত্ত মানুষ আছে মহা ঝামেলা না পারি বলতে না পারি সইতে।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রী লিমা আক্তার বলেন, আমি কলেজ যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে। শুনেছি আজকে নাকি হরতাল। ২০ মিনিট যাবত বাসের জন্য অপেক্ষা করছি আমার কলেজে যাওয়ার বাস পাচ্ছিনা। আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবো বাঁশ না দিলে বাসায় চলে যাবো।

সড়ক অবরোধ করে হরতালের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের ছাত্রনেতারা। সকাল পৌনে আটটার দিকে একজন একটি বালতিতে করে পানি নিয়ে সড়কে ব্যানার-পোস্টার জড়ো করে লাগানো আগুন নেভাতে এলে তেড়ে আসেন নেতা–কর্মীরা। এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসেন। আগুন নেভাতে আসা ব্যক্তির পক্ষে অবস্থান নেন তাঁরা। আগুন কেন লাগানো হয়েছে, তা জানতে চেয়ে তাঁদের শাসাতে দেখা যায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে।

উপস্থিত ছাত্রনেতাদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন, ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়, ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি ফয়জুল্লাহ, ছাত্র ফ্রন্টের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য, ছাত্র ফ্রন্টের একাংশের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ প্রমুখ।

নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানোর তৎপরতা বন্ধের দাবিতে আজ সারা দেশে আধা বেলা হরতাল পালনের ডাক দেয় বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ হরতালে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। জোটের নেতারা বলেছেন, দুর্গতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় মানুষ হরতালে সমর্থন দেবে। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো বাধা না দেওয়া হয়, তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হবে।

রাজধানীর পুরানা পল্টনে মৈত্রী মিলনায়তনে গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানুষকে রক্ষার এ হরতালে আমরা আশা করব সব ধরনের প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, শপিং মল, পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পরিষেবা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।’ তিনি জানান, রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেবেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা।

এদিকে গতকাল রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, জনকল্যাণমূলক যেকোনো দাবির প্রতি সমর্থন জানানোর অংশ হিসেবে বিএনপি বাম গণতান্ত্রিক জোটের এ হরতালে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত