প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় উসকানি: দোষীদের চিহ্নিত করে ‘কঠিন শাস্তি’ দেওয়া হবে
প্রকাশ: ৮ নভেম্বর ২০২২, ১০:০৫ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:০৭
এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় উসকানির অভিযোগে সারাদেশে সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শিক্ষা প্রশাসন বলছে, প্রশ্নপত্রে অমূলক প্রসঙ্গ টেনে ধর্মীয় উসকানি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ কোনো বক্তব্য যেন না থাকে সেই নির্দেশনা আগেই দেওয়া ছিল। তবুও কেন এমন হলো, এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের মঙ্গলবারের মধ্যে চিহ্নিত করে ‘কঠিন শাস্তি’ দেওয়া হবে।
রবিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নাটক সিরাজউদ্দৌলা অংশের ১১ নম্বর প্রশ্নের উদ্দীপকে উসকানিমূলক প্রশ্ন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার রাতে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যে এ প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে জড়িত প্রশ্নকর্তা ও মডারেটরদের খুঁজে বের করা হবে।
অধ্যাপক তপন কুমার বলেন, ‘যে প্রশ্ন হয়েছে তা অবশ্যই সাম্প্রদায়িক উসকানির মধ্যে পড়ে। এতে আমরা মর্মাহত। কোনোভাবে এ ধরনের প্রশ্ন করা ঠিক হয়নি। কিন্তু বোর্ডের কারো যেহেতু প্রশ্ন দেখার সুযোগ নেই, তাই আমরা এ বিষয়টি আগে থেকে ধরতে পারিনি। তবে প্রশ্নের পাণ্ডুলিপি বিজি প্রেসে জমা আছে। আমরা মঙ্গলবারের মধ্যে পাণ্ডুলিপি দেখে প্রশ্নকর্তা ও মডারেটরদের চিহ্নিত করব। এরপর তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক ও বিদ্বেষপূর্ণ কোনো বক্তব্য যেন না থাকে সে জন্য লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নিয়ে ওরিয়েন্টেশন করানো হয়। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরো কঠোর হব।’
সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এইচএসসির প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানি গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এ দেশে কোনো পরীক্ষার প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক কিছু থাকবে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চিহ্নিত করছি, এ প্রশ্নটি কে করেছেন, কোন মডারেটর করেছেন। আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্ন সেটিংস, প্রশ্ন মডারেটিং কাজগুলো এমনভাবে হয়, যিনি প্রশ্ন সেট করে যান তিনি আর ওই প্রশ্ন দেখতে পারেন না। যিনি মডারেট করে যান তিনিও ওই প্রশ্ন দেখতে পারেন না। ‘সেটার’ ও ‘মডারেটর’ ছাড়া প্রশ্নের একটি অক্ষরও কারও আর দেখবার সুযোগ থাকে না। আমাদের একটা সুস্পষ্ট নির্দেশিকা আছে, কী কী বিষয় মাথায় রেখে প্রশ্নগুলো তারা করবেন। প্রশ্নে সাম্প্রদায়িকতার কিছু যাতে না থাকে সেটিও সে নির্দেশিকায় থাকে।’
প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির বিষয়টি খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘কোনো একজন প্রশ্নকর্তা প্রশ্নটি করেছেন। যিনি মডারেট করেছেন তার দৃষ্টিও হয়তো কোনো কারণে এটি এড়িয়ে গেছে বা তিনিও হয়তো এটি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। আমরা চিহ্নিত করছি এ প্রশ্নটি কোন সেটার করেছেন, কোন মডারেটর করেছেন। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। যারা চিহ্নিত হবেন তাদের আর প্রশ্ন প্রণয়নের কার্যক্রমের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত রাখা হবে না।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত