পূজামণ্ডপে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নয়, আয়োজকদের ডিএমপির ৭ নির্দেশনা 

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২১, ১১:১২ |  আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:৪২

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও নিরাপত্তার বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ডিএমপি। 

সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকাল চারটায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক সমন্বয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

সভার শুরুতেই ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত সকলকে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতীয় উৎসবে সুদৃঢ় নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনীর। আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে ডিএমপি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার রুখতে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

এ সময় তিনি বলেন, পূজামণ্ডপে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের পূজামণ্ডপে প্রবেশের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন তিনি। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অধিক সংখ্যক লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হবেন। যারা এক ডোজও টিকা নেননি কিংবা পঞ্চাশোর্ধ, তাদের অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি। তবে সত্তরোর্ধ্বদের পূজামণ্ডপে না আসার জন্য নিরুৎসাহিত করেন।

তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন সম্পর্কে ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রতিমা তৈরি শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত কার কী দায়িত্ব, তার নির্দেশনা ইতোমধ্যে ডিএমপির সংশ্লিষ্ট বিভাগের অফিসারদের দেওয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য প্রতিটি মণ্ডপে স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে নিরাপত্তা কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিসি ও ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সমন্বয় সভায় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে-

* দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময়, পূজা চলাকালীন ও বিসর্জনের সময় মোবাইল পেট্রোলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

* ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলাকাভিত্তিক পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করবেন।

* পূজামণ্ডপ ও আশপাশে পকেটমার, ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের টহল ডিউটি নিয়োজিত থাকবে।

* পূজার এই সময়টা সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করা হবে।

আয়োজকদের মানতে হবে ৭ নির্দেশনা

* পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা (রাত্রিকালীন ছবি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন), Fire Extinguisher স্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আর্চওয়ে গেইট স্থাপন করতে হবে।

* পূজামণ্ডপে পৃথক প্রবেশ ও বাহির গেইট মজবুতভাবে স্থাপন। যেসব মণ্ডপে সীমানা দেয়াল নেই সেসব ক্ষেত্রে বাঁশের শক্ত বেড়া নির্মাণ এবং নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক প্রবেশ গেটের ব্যবস্থা করা।

* প্রতিমা নির্মাণ স্থান, পূজামণ্ডপসহ সকল স্থানে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, স্বেচ্ছাসেবকদের এসবি দ্বারা ভেটিং করানো ও তালিকা সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ এবং আলাদা পোশাক, পরিচয়পত্র ও আর্মড ব্যান্ড প্রদান করতে হবে।

* পূজা উপলক্ষে মাদকের ব্যবহার, জুয়া খেলা ও আতশবাজির ব্যবহার বন্ধ রাখা।

* আজান ও নামাজের সময় বাদ্য-বাজনা বন্ধ রাখা এবং পিএ সেট ব্যবহার না করা।

* রাস্তায় মেলা না বসানো এবং পূজা মণ্ডপ সংলগ্ন স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।

* রাত আটটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সমন্বয় সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাব, আনসার প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি ও বাংলাদেশ রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিনিধি এবং হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে আগামী ১১ অক্টোবর শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়ে ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী এবং বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত