পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৯:৫৩ |  আপডেট  : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩০

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল–এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। আজ সোমবার বিকেলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে তাঁর পক্ষে ১৭৪টি ভোট পড়ে। এক দিন আগে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানো ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহেরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতারা এ সময় অধিবেশন বর্জন করেন।

পার্লামেন্টে এই ভোটাভুটিতে শাহবাজ শরিফের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পিটিআইয়ের সহসভাপতি ও সদ্য বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি। তাঁর নেতৃত্বে পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা অধিবেশন বর্জন করায় শাহবাজের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। পরে ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ জন সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে ১৭৪ জনের রায় পেয়েছেন শাহবাজ শরিফ। খবর ডনের।

এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্প্রতি আলোচিত হলেও দেশের ভেতরে প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য আগে থেকেই শাহবাজ শরিফের সুনাম ছিল।

৭০ বছর বয়সী শাহবাজের জন্ম লাহোরে। ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের এই সন্তানের পড়াশোনা পাকিস্তানেই। পড়াশোনা শেষে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন তিনি। বর্তমানে পাকিস্তানের একটি ইস্পাত কারখানায় যৌথ মালিকানা রয়েছে তাঁর। শাহবাজের রাজনৈতিক জীবন শুরু ১৯৯৭ সালে, পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। ১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে কারারুদ্ধ হন তিনি। পরের বছরেই সৌদি আরবে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাঁকে।

দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকার পর ২০০৭ সালে নিজ দেশে ফিরে আসেন শাহবাজ। আবার পা রাখেন রাজনীতিতে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে আবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। তৃতীয় মেয়াদে শাহবাজ প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন ২০১৩ সালে।

শাহবাজ জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখেন তাঁর ভাই নওয়াজ শরিফ দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে পাকিস্তান ত্যাগের পর। এরপর তিনি পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতির দায়িত্ব পান। তবে নওয়াজের বিরুদ্ধে ওই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল বলে দাবি করে আসছে তাঁর পরিবার ও সমর্থকেরা।

শাহবাজ শরিফের বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির মামলা হয়েছে। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেও মামলার মুখে পড়েছেন তিনি। তবে সেসব মামলায় শাহবাজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়নি।

এদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্কের দিক দিয়ে ভাই নওয়াজের চেয়ে শাহবাজ আলাদা বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের ভাষ্য, শাহবাজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। পারমাণবিক শক্তিধর দেশটিতে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত নীতিতে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর।

পাকিস্তানের বেসামরিক সরকার পতনেও দেশটির সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপের ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনবার দেশটিতে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী। এমনকি পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রীই এখন পর্যন্ত পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেননি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত