নিশ্চিত হয়েই পূজামণ্ডপে সহিংসতায় ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করা হবে

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৪:০৯ |  আপডেট  : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩

শিগগির পূজামণ্ডপে সহিংসতায় ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১০টি মামলা হয়েছে। রংপুর ও নোয়াখালীর ঘটনায় গ্রেফতাররা ইন্ধনদাতাদের নাম জানিয়েছে। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তারা এসব নাম জানিয়েছেন। তবে আমরা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তাদের নাম আপনাদের সামনে প্রকাশ করবো। সেখানে বিএনপি-জামায়াত আছে কি না সেটা এখনই বলতে চাচ্ছি না। আমরা নিশ্চিত হয়েই আপনাদের জানাতে চাই। গ্রেফতারদের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে, শিগগির সেই ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করা হবে।’

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি বলে গেছেন, এদেশ সবার; এদেশে ধর্ম নিয়ে কোনো বৈষম্য হবে না। এদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ। আমরা সেই আদর্শ ধারণ করে চলেছি। আমি দেখেছি, হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই যার যার ধর্ম পালন করে আসছেন। কিন্তু, ইদানীং পূজামণ্ডপে সহিংসতা হচ্ছে। পূজামণ্ডপে কে বা কারা কোরআন শরিফ রেখে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা শুরুতেই ধরে নিয়েছিলাম, কোরআন শরিফ রেখে দিয়েছে কোনো এক জায়গা থেকে এসেছে। আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম, আমাদের পুলিশের সব পর্যায়ের টিম সেখানে পাঠিয়েছিলাম, যাতে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হয়। আমরা দেখলাম, একটা মসজিদের পাশে একটা পুকুর ছিল, পুকুরে মাছ চাষ হতো, পুকুরের মাছচাষি মসজিদের বারান্দায় একটা ক্যামেরা বসিয়েছে, যেখানে পরিষ্কার দেখা গেছে, কেউ মসজিদ থেকে কোরআন নিয়ে হনুমানের গদার স্থানে কোরআন রেখে গদা নিয়ে বেরিয়ে চলে এলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন এই ঘটনা সামনে চলে এলো তখন তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি, তার নাম প্রকাশ করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার সহিংসতায় ১০টি মামলা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিল, জুম্মার নামাজের পর অসুবিধা হতে পারে। আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বলেছিলাম, তার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেবেন এবং তারা তা করেছেন। আমাদের নামাজও ঠিকভাবে শেষ হলো। কিন্তু দুইভাগে বিতর্ক শুরু হলো। একপক্ষ পুলিশের সামনে হল্লা শুরু করলো। আরেকপক্ষ পুলিশকে ব্যস্ত রেখে ধ্বংসযজ্ঞ চালালো। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলো। সেখানে বেশকিছু ভাঙচুর হয়েছে। ওই সময় পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ায় একজন মারা যায়।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই সহিংসতা সুপরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য করেছে একটি মহল। এই ঘটনায় গ্রেফতারদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, এতে অনেকের নাম জানা গেছে। খুব শিগগির কারা এসব ঘটিয়েছে তা উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

এসময় সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক মেহদী আজাদ মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, অর্থ সম্পাদক মো. শফিইল্লাহ সুমন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য ইসমাইল হোসাইন রাসেল, শাহজাহান মোল্লা, হাসিফ মাহমুদ শাহ, শাহাদাত হোসেন রাকিব উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত