নারদ মামলায় চার হেভিওয়েটের জামিনে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের, এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২১, ০৯:০৯ | আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬
নারদকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত চার হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীর জামিনে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের। নিম্ন আদালতে জামিন মঞ্জুর হতেই পরবর্তী পদক্ষেপ সিবিআইয়ের। দিল্লি থেকে হাইকোর্টে মামলা অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা প্রত্যেকেই প্রভাবশালী। তদন্তে প্রভাব খাটিয়ে বাধা সৃষ্টির আশঙ্কাতেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। শুনানি পর্ব শেষে জামিনে স্থগিতাদেশ এবং বুধবার পর্যন্ত নারদ মামলায় অভিযুক্ত ৪ নেতা মন্ত্রীকে জেল হেফাজতের রায় শোনায় আদালত। কলকাতা হাইকোর্টে বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি । ততদিন পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকতে হবে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।
আপাতত দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক ও এক নেতা সহ নারদ মামলায় চার অভিযুক্তকে প্রেসিডেন্সি সেলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে এক ওয়ার্ডে তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে ববি ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এভাবে দিন শেষ হতে পট পরিবর্তনে ফের ক্ষুব্ধ তৃণমূল। এক তরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত।
সোমবার সকালেই নারদ মামলায় (Narada Scam) চাঞ্চল্যকর মোড়। চার হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করে CBI। সোমবার সকালে প্রথমে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছন CBI গোয়েন্দারা। বাড়ির বাইরে মোতায়েন করা হয় প্রচুর সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরপরই তাঁকে বাইরে নিয়ে আসা হয়। তিনি নিজে জানান, নারদা কাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নিজাম প্যালেসে CBI দফতরে নিয়ে আসা হয় বিধায়ক মদন মিত্র, প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। নিয়ে আসা হয় রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। চারজনকে গ্রেফতার করে CBI।
এরপর করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল মাধ্যমে CBI-এর বিশেষ আদালতে তাঁদের ভার্চুয়াল শুনানি শুরু হয়। তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চেয়ে আবেদন জানায় আদালতে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, এই চারজন অত্যন্ত প্রভাবশালী। ফলে সাক্ষ্যপ্রমান লুঠ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু, তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। প্রায় আড়াই ঘণ্টা রায়দান স্থগিত রাখার পর শেষ পর্যন্ত জামিন পান চার হেভিওয়েট।
অন্যদিকে, গ্রেফতারির খবর পেয়ে নিজাম প্যালেসে পৌঁছন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেতা মন্ত্রীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ৬ ঘণ্টা সেখানে ঠায় বসেও থাকেন তিনি। শুনানি শেষ হতেই রায়দানের আগেই বেরিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বিধায়কদের গ্রেফতারির খবর পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মী সমর্থকেরা।
তৃণমূল কর্মীদের ক্ষোভে রণক্ষেত্র নিজাম প্যালেস ও রাজভবনের ভবন চত্বর। জেলায় জেলায় ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। কলকাতার বিভিন্ন মোড়ে শুরু হয় অবরোধ। এমনকি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে নিজাম প্যালেসচত্বরে ইট-পাথর ছোড়ারও অভিযোগ ওঠে। দিনভর টানটান ঘটনাক্রমের পর অবশেষে সন্ধেয় আদালতে অন্তবর্তী জামিন পান চার হেভিওয়েট নেতা। কিন্তু ফের কলকাতা হাইকোর্টের শুনানি শেষে মামলায় এল রোমাঞ্চকর মোড়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত