নায়করাজকে হারানোর চলে গেল পাঁচটি বছর
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২২, ১২:০৯ | আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:০৯
দেখতে দেখতে চলে গেল পাঁচটি বছর। ২০১৭ সালের আজকের এ দিনে (২১ আগস্ট) ঢাকাই সিনেমার কালজয়ী অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক মৃত্যুবরণ করেন।
রোববার তার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সবচেয়ে বড় এই নক্ষত্রের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায়। সাদাকালো থেকে রঙিন সেলুলয়েডের দীর্ঘ ইতিহাসে দাপুট অবস্থান তার।
রাজ্জাক অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো রূপালি জগতকে যেমন করেছে আলোকিত, তেমনি করেছে সমৃদ্ধ। তবে তার চলার পথটা খুব একটা মসৃণ ছিল না।
সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকে হাতেখড়ি হয় রাজ্জাকের। ১৯৬৪ সালে নতুন জীবন গড়তে সপরিবারে বাংলাদেশে পাড়ি জমানো রাজ্জাক কঠোর পরিশ্রম আর সংগ্রাম করেছেন।
‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রের পরিচালক আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় বাংলাদেশি সিনেমায় কাজের সুযোগ পান রাজ্জাক। ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয় তার। একই বছর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে ঢালিউডে প্রথম উপস্থিত হয়েই সবার মন জয় করে নেন রাজ্জাক। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ক্যারিয়ারের মাত্র আট বছরেই শতাধিক সিনেমার মাইলফলক স্পর্শ করে ফেলেন এই নায়ক। এ অভিনেতাকে নায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী।
তিনি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে। অভিনয়ের বাইরে রাজ্জাক সফল ছিলেন প্রযোজক-নির্মাতা হিসেবেও। প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র।
রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে- ‘স্লোগান’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘অতিথি’, ‘কে তুমি’, ‘স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা’, ‘প্রিয়তমা’, ‘পলাতক’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘খেলাঘর’, ‘চোখের জলে’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘ভাইবোন’, ‘বাঁদী থেকে বেগম’, ‘সাধু শয়তান’, ‘অনেক প্রেম অনেক জ্বালা’, ‘মায়ার বাঁধন’, ‘গুণ্ডা’, ‘আগুন’, ‘মতিমহল’, ‘অমর প্রেম’, ‘যাদুর বাঁশী’, ‘অগ্নিশিখা’, ‘বন্ধু’, ‘কাপুরুষ’, ‘অশিক্ষিত’, ‘সখি তুমি কার’, ‘নাগিন’, ‘আনারকলি’, ‘লাইলী মজনু’ ইত্যাদি।
নায়করাজ সর্বশেষ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘আয়না কাহিনী’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রে জুটি হিসেবে অভিনয় করেছিলেন সম্রাট ও কেয়া। এরপর আর নতুন কোনও চলচ্চিত্র নির্মাণে তাকে দেখা যায়নি।
দীর্ঘ কর্মজীবনে আজীবন সম্মাননাসহ মোট ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন রাজ্জাক। এছাড়াও চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য রাষ্ট্র তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’-এ ভূষিত করে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত