নাট্যব্যক্তিত্ব উৎপল দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২১, ১১:৫২ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০০
আজ ১৯ আগস্ট । নাট্যব্যক্তিত্ব উৎপল দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৩ সালের ১৯ আগস্ট ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে মাত্র ৬৪ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। উৎপল দত্ত তাঁর সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের এবং মঞ্চের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
তিনি ১৯২৯ সালের ২৯ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। একাধারে তিনি একজন অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও লেখক। রাজনৈতিক দর্শনের দিক থেকে তিনি ছিলেন বামপন্থী। মার্কসবাদী আধুনিক ভারতীয় থিয়েটারের ইতিহাসে অভিনেতা, নাট্যনির্দেশক ও নাট্যকার হিসেবে তাঁর স্হান সুনির্দিষ্ট।
১৯৪৭ সালে লিটন থিয়েটার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করে শেক্সপিয়র, বার্নাড শ, ক্লিফর্ড ওডেটস প্রমুখের নাটক ইংরেজিতে প্রযোজনা করতে করতেই দর্শক সমাজের সীমাবদ্ধতায় বিব্রত হয়ে লিটল থিয়েটার গ্রুপকে বাংলা প্রযোজনার দিকে পরিচালিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে বৃহত্তর দর্শক সমাজের কাছে পৌঁছবার আত্যন্তিক আগ্রহে গণনাট্য সংঘে ও রাজনৈতিক পথনাটিকার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। তাঁর রচনা ও পরিচালনায় অঙ্গার, ফেরারি ফৌজ, কল্লোল প্রভৃতি নাটকে রাজনৈতিক বোধ, আঙ্গিক প্রয়োগ নাটক ও নাট্যাভিনয়ের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তাঁকে গ্রুপ থিয়েটারের অঙ্গনে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়।
১৯৭১ সালে পিপলস লিটল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করে টিনের তলোয়ার নাটক তার একটি বড় পদক্ষেপ। উৎপল দত্তের রাজনৈতিক নাটকের মধ্যে শ্রেনী চেতনা, ইতিহাস চেতনা ও মধ্যবিত্ত চেতনার পরিশীলিত মিশেল তাঁকে অন্যভাবে চেনায়। এরই পাশাপাশি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তাঁর পারদর্শিতা ছিলো প্রশ্নাতীত। গুড্ডি, গোলমাল, শৌখিন প্রভৃতিতে তাঁর কৌতুকাভিনয় আজও মানুষকে আনন্দ দেয়। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় হীরক রাজার দেশে, জয় বাবা ফেলুনাথ ও আগন্তুক চলচ্চিত্রেও তিনি অভিনয় করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামে তিনি গণজাগরন মূলক যাত্রা ও নাটকে তিনি নির্দেশনা দেন ও অভিনয় করেন। ১৯৯৩ সালে সত্যজিৎ রায়ের আগন্তুক ছবিতে অভিনয়ের জন্য পান বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সেরা অভিনেতার পুরস্কার। হিন্দি ও বাংলা বাণিজ্যিক ছবিতেও তিনি দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন। গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি, ঋত্বিক ঘটকের, ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’, সত্যজিৎ রায়ের ‘জন অরণ্য’, ‘হীরক রাজার দেশে’ প্রভৃতিতে তাঁর অভিনয় বাংলা সিনেমার সম্পদ।
তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন তারমধ্যে ‘ঝড়’, ‘বৈশাখী মেঘ’, ‘ইনকেলাব কি বাদ’, ‘ঘুম ভাঙার গান’ উল্লেখযোগ্য।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত