নন্দীগ্রামে বিনা হালচাষে সরিষার আবাদ, বাম্পার ফলনে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৩১ | আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০০

বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিনা হালচাষে সরিষার আবাদ হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বিনা হালচাষে বারি-১৪ সরিষার আবাদ হয়েছে। নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শে কৃষকরা বিনা হালচাষে সরিষার আবাদ করতে সক্ষম হয়েছে। এতে বিনা হালচাষে সরিষার আবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।
ধানী জমিতে ধান কাটার ১০-১৫দিন আগেই রিলে পদ্ধতিতে সরিষার বীজ বপন করা হয়। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায় কোনো কোনো জমিতে সরিষার পাক ধরেছে। কৃষকরা যেসব জমিতে আগাম সরিষার আবাদ করেছিলো তারা জমি থেকে সরিষা কাটা-মাড়াই কাজ ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। কৃষকরা সরিষার বাম্পার ফলনে অনেকটা লাভবান হচ্ছে। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিস্তৃর্ণ মাঠে সরিষার ক্ষেত বলে দিচ্ছে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি রবি মৌসুমে কৃষকরা ভালোভাবে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে।
কৃষকদের চোখে-মুখে এখন আনন্দের ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শে আমি তিন বিঘা জমিতে বিনা হালচাষে বারি-১৪ সরিষার আবাদ করেছি। প্রথমে ভেবেছিলাম সরিষার ভালো ফলন হবে না। এখন দেখছি এভাবেও সরিষার চাষ করলে অধিক হারে ফলন এবং অনেক আগেই সরিষা কর্তন করা সম্ভব হয়। এতে বাজারে সরিষার দামও ভালো পাওয়া যায়। আশা করছি আগামীতে আরো বেশি জমিতে বিনা হালচাষে সরিষার আবাদ করবো। বিনা হালচাষে সরিষার ভালো ফলন হওয়ায় আমার আশপাশের কৃষকরাও আগামী বছরে এভাবে বিনা হালচাষে সরিষা রোপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বিনা হালচাষে বারি-১৪ সরিষার জমি পরিদর্শন করেছেন বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, রোপা আমন ধান কাটার ১০-১৫ দিন আগে সাধারণত যেসব জমিতে পানি থাকে না কিন্তু জমি কাদা কাদা ভাব থাকে সেসব জমিতে সরিষার বীজ ছিটিয়ে রোপণ করা হয়। একেই মূলত রিলে পদ্ধতি বলা হয়। তিনি আরো বলেন, এই পদ্ধতিতে এক বিঘা জমির জন্য এক কেজি সরিষা বীজের প্রয়োজন হয়। এভাবে সঠিক সময়ে সরিষার আবাদ করলে বোরো ধানও যথাসময়ে আবাদ করা যায়। রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদের মাধ্যমে কৃষকেরা অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই বছরে দুটি ফসলের পরিবর্তে তিনটি ফসল পাচ্ছেন। নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৮৭১০ হেক্টর জমিতে ১৪০৩৮ মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও কিছু কমবেশি হতে পারে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, চলতি বছরে নন্দীগ্রাম উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। সরিষার তেলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। সরিষার খৈল জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আর জমিতে সরিষার আবাদ করলে সেই জমিতে সরিষা গাছের পাতা পড়ে জমির খাদ্য চাহিদা পূরণ করে। এক কথায় বলা যায় সরিষার চাষাবাদ লাভজনক।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত