নতুন রাষ্ট্রপতির নিকট জাতির প্রত্যাশা অনেক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৩, ১৬:২৭ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫
বর্তমান ব্যবস্থায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত হলেও - যদি সে পদে যদি একজন ভালো মানুষ আসিন হন, তাহলে জাতির প্রত্যাশা আর যাই হোক অন্ততপক্ষে তাঁর দ্বারা দেশ ও জাতির অমঙ্গল হবেনা। সংবিধানের বিধান মেনে নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নির্বাচিত হয়েছেন। এ জন্য মানুষ তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
গত ২৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহনের পর আমরা আশা করেছিলাম প্রধান বিরোধীদল বিএনপি রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানাবে। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন “নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো প্রত্যাশা নেই বিএনপির”।
সংবিধান মেনে নির্বাচিত একজন রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন না জানিয়ে এবং তাঁর কাছে প্রত্যাশা নেই বলে বিএনপির মহাসচিব তাঁর দলীয় চরিত্র জাতির কাছে উন্মোচন করলেন। কারণ বিএনপির রাজনৈতিক চরিত্র হলো সংবিধান লঙ্ঘন করা।
১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েমের মতো একজন মহাভদ্রলোককে সেনাপতি জিয়াউর রহমান কিভাবে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিতাড়িত করে নিজে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেছিলেন তা আমারা ভুলে যাইনি। সায়েম সাহেবের লক্ষ্য ছিল ১৯৭৭ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা অর্পণ করা। অসাংবিধানিক পথে জিয়াউর রহমান কর্তৃক রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলের সীমাহীন লোভের কারণে রাষ্ট্রপতি সায়েম সাহেবের জাতীয় নির্বাচন করার পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে যায়।
তারপরে জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ও জনধিকৃত জনপ্রিয়তাহীন রাজনীতিবিদদের নিয়ে গঠন করেন মুসলিম লীগের চেতনাধারী দল বিএনপি। রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় করে অপ্রয়োজনীয় ‘হ্যাঁ আর না’ভোট করেন ব্যক্তি স্বার্থে। প্রিজাইডিং অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয় ভোটারের উপস্থিতি দরকার নেই ৯৮% ভোট কাস্ট করতে। এ সবই করা হয় সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে। যা পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ূব খান করেছিলেন।
তারপরে আসে দ্বিতীয় সেনাশাসক লে. জেনারেল (অব) হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সংবিধান লংঘনের আমল। জনরোষে এরশাদের পতন হলে নির্বাচনের মাধ্যমে জামায়াতের সমর্থনে ক্ষমতায় আসে বেগম জিয়া। তিনি রাষ্ট্রপতি পদে বসান ১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী আবদুর রহমান বিশ্বাসকে।
২০০১ সালে দ্বিতীয় বার সরকার গঠন করে বিএনপি রাষ্ট্রপতি করে দলের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ডা.এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে। তিনি রাষ্ট্রপতি পদকে সংবিধানের আলোকে আলোকিত করতে চেয়ে ছিলেন।যা বিএনপির ভাল লাগেনি। জিয়াউর রহমানের কৃত্তিম কবর জিয়ারত করতে না যাওয়ায় বিএনপি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক পথে দলীয় মাস্তানদের পথে বসিয়ে ডা. চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করে। জনমত ও সংবিধান পক্ষে থাকার পরেও অতিভদ্রলোক ডা.বি চৌধুরী সাহেব পদত্যাগ করেন। বিএনপি এর পরে ড. ইয়াজউদ্দীন আহমদকে রাষ্ট্রপতি করে। তাঁর আমলে বার বার সংবিধান লংঘিত হয়। যার দরুন ইয়াজউদ্দীন আহমদকে মানুষ “ ইয়েস উদ্দীন” খেতাব দেয়। এমন অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে বিএনপির সংবিধান লংঘনের।
একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা, প্রাক্তন ছাত্রনেতা,বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী, কারাভোগকারী, নির্যাতিত ও সফল পেশাজীবী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে সংবিধান মেনে রাষ্ট্রপতি করে আওয়ামী লীগ প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঠিক কাজই করেছেন। আমার গভীর আস্থা আছে নতুন রাষ্ট্রপতির ওপর। কারণ গত অর্ধযুগ তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
তাঁর ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, জ্ঞান, অঙ্গিকার ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক। আশা করি নতুন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতির প্রত্যাশা পূরনে সফল হবেন। তাঁর সফলতা কামনা করি। আল্লাহ তাঁর সহায় হোন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত