ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’, রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:১৬ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভারতের উড়িষ্যা, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া দফতর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। জেলেদের আগামী সোমবার পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে উত্তর-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে অতি গভীর নিম্নচাপ। তা ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ভারতের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই অতি গভীর নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) উড়িষ্যা দক্ষিণে এবং অন্ধ্র প্রদেশের উত্তরে কলিঙ্গপত্তনমের কাছ দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগ অতিক্রম করবে। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার।
মঙ্গলবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামসহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই ভারী বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে রাজ্য আবহাওয়া দফতর। ২০২১ সালের মধ্যে এটি বঙ্গোপসাগারে তৃতীয় ঘূর্ণিঝড় হতে চলছে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয়বর্তী কিছু এলাকাসহ ঢাকাতেও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্রবন্দর ও নদীবন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর (তিন নম্বর) দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত এবং নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর (এক নম্বর) সর্তকতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর ফলে ঢাকাসহ সারা দেশেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে, এরই মধ্যে রাজধানীর কোথাও কোথাও বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পূর্ব মধ্য ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে নদীবন্দরগুলোর জন্য এক সতর্ক বার্তায় বলা হয়, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য এসব এলাকার বন্দরগুলোকে ১ নম্বর (এক নম্বর) সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরগুলোর সতর্ক বার্তায় বলা হয়, গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিয় ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। নিম্নচাপটি এখন চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম দূরে অবস্থান করছে। এছাড়া মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম দূরে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর (এক নম্বর) দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।পাশাপাশি গভীর সাগরে বিচরণ করতে না করা হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত