দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে আজকালের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪৮ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৪
গণজমায়েত করতে নিষেধ করা হলেও নাগরিকরা তা অমান্য করায় সার্স কোভ-২ বা কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। একইসঙ্গে বাড়ছে হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও।
রবিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। দেশের বিভাগীয় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বলেছিলাম গণজমায়েত কমাতে হবে, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয়, কোনো একটা লোকও এসব বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। যার ফলে দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।’
দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বাড়ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আমি আগেই বলেছিলাম, টিকা সংক্রমণ কমায় না, মৃত্যুর হার কমায়। টিকার অভাব হচ্ছে না। কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আপনারা জানেন দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে। গত এক সপ্তাহ আগেও দেশে দৈনিক দুই থেকে আড়াইশো মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকালও দেশের সংক্রমণের হার ৬ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। যখন থেকে সংক্রমণ বাড়া শুরু হয়েছে, তখন থেকেই আমরা সতর্কতা নিয়ে প্রচার করে যাচ্ছি।’
দেশে এখন পর্যন্ত আট কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকা কার্যক্রম দেশের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এবং চলমান আছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকার অভাব হচ্ছে না। কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। সে কারণে আমার বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করছি। টিকা দেওয়ার জন্য আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ইউনিয়নে তিনটি ওয়ার্ডে টিকা দেওয়া হতো, এখন সেটাকে ৯টি ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছি, যাতে বেশি মানুষ টিকার আওতায় আসে। আজ মৃত্যুর হার এত কম কেন? কারণ এ পর্যন্ত পৌনে আট কোটি মানুষ টিকা নিয়েছে। তাই মৃত্যুর হার এত কম।’
বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারিভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আজ অথবা কালের মধ্যেই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এর মাধ্যমে পূর্বে যে নির্দেশনাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সারাদেশে বার্তা চলে যাবে। আমরা কেবিনেট থেকে জানতে পেরেছি এর কার্যকারিতাও খুব শিগগিরই শুরু হয়ে যাবে। সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে সরকারকে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। আর এই মুহূর্তে সংক্রমণের লক্ষণ আমরা দেখছি, সংক্রমণ অতিমাত্রায়, অতি দ্রুত বাড়ছে।’
ক্যান্সারে বছরে মারা যাচ্ছে লাখো মানুষ
দেশে আশঙ্কাজনকভাবে ক্যান্সার বাড়ছে। এই রোগে বছরে এক লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ক্যান্সারে প্রতি বছরে এক লাখ মানুষ মারা যায়। এখন চিকিৎসাধীন ২০ লাখ।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধীনে ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট সমন্বিত ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিটের উদ্বোধন করা হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে মানুষ সব বিভাগীয় শহরেই বিশেষায়িত এসব সেবা পাবেন।’
ভেজাল খাদ্য, মাদক, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ বেশকিছু কারণে এসব মৃত্যু হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক মো. ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত