দেশজুড়ে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫৯ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে একাধারে ৬ দিন ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা এর আগে ঘটেনি। এটি নাগরিকদের মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। তাই এই ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সরকার ছাড়াও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এর দায় এড়াতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
রোববার (১১ আগস্ট) এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইন্টারনেট বন্ধের দায়ভার সবার আগে বিটিআরসির ওপর বর্তায়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে নিরবচ্ছিন্ন সেবা এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব ছিল নিয়ন্ত্রক কমিশনের ওপর। কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এর ওপর গ্রাহকের অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহার করার সুযোগও দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের এক দেশ এক রেট গাইডলাইন বাস্তবায়ন না করতে পারায় তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে যেন এদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়। সেইসঙ্গে কমিশনের দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
ইন্টারনেট বন্ধের দায় বিএসসিপিএলসি এড়াতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সাবমেরিন ক্যাবল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যান্ডউইথ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে পুরো জাতিকে জিম্মি করে রেখেছিল। তাই তার শুধু পদত্যাগ নয় তাকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।
অপরদিকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আইটি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার সোসাইটির চেয়ারম্যান তানজিবা রহমান।
তিনি বলেন, এটি বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কারণ আমরা কাজ শেষ করার পর একটা রিভিউ হয়। যার ভিত্তিতে র্যাঙ্কিং হয়। যেহেতু বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ সপ্তাহ কোনও কাজ হয়নি সেজন্য আমরা র্যাঙ্কিংয়ে নিচে পড়ে যাবো। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া এমন ঘটনার ফলে দেশের আইটি খাত মুখ থুবড়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭ লাখ আইটি ফ্রিল্যান্সার, প্রায় ৩ লাখের বেশি সফটওয়্যার ডেভেলপার রয়েছেন। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ১ লাখ হার্ডওয়্যার, ই-কমার্সে ৩ লাখের বেশি তরুণ-তরুণীসহ প্রায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণী আইটি সেক্টরে কাজ করছেন। এর মাধ্যমে দেশ প্রতিমাসে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জন করছে।
একইসঙ্গে এই খাতকে ঘিরে কয়েক লক্ষাধিক নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তা, কয়েক হাজার আইটি ও আইটিইএস কোম্পানিও তৈরি হয়েছে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত