দুইজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জার্মান দার্শনিক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ১৫:২৭ |  আপডেট  : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭

গট‌ফ্রিড ভিলহেল্ম লাইব‌নিৎস (জুলাই ১, ১৬৪৬ – নভেম্বর ১৪, ১৭১৬) একজন জার্মান দার্শনিক ও গণিতবিদ যাকে ক্যালকুলাসের আবিষ্কর্তা হিসেবে সম্মান দেয়া হয়। তার ব্যবহৃত ক্যালকুলাসের অঙ্কপাতন পদ্ধতি বা নোটেশনগুলো বর্তমানে অনুসরণ করা হয়। আধুনিক কম্পিউটারের মূল ভিত্তি বাইনারি পদ্ধতি তার উদ্ভাবন। পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, সম্ভাবনা তত্ত্ব, তথ্য বিজ্ঞানে তার ব্যাপক অবদান আছে।

তার তিনপুরুষ স্যাক্সনি সরকারের অধীনে পদস্থ কর্মচারী ছিলেন এবং তার পিতা লাইপৎসিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈতিক দর্শন বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন। তাই একটি শিক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশে লাইবনিৎসের বাল্যকাল অতিবাহিত হয়। পিতৃবিয়োগের পর তিনি তার পিতার গ্রন্থাগারের উত্তরাধিকার হন। সাত বছর বয়সে তাকে এই গ্রন্থাগারে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। তার বিদ্যালয়ের পড়াশুনা কর্তৃপক্ষের অল্প কিছু মূলনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়ায় তিনি তার পিতার গ্রন্থাগারের বিভিন্ন দর্শন শাস্ত্রীয় ও ধর্মতাত্ত্বিক বইগুলো পড়তে শুরু করেন, যে বইগুলো পড়ার জন্য তাকে কলেজ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। বেশিরভাগ বইগুলো লাতিন ভাষায় লিখিত হওয়ার কারণে তিনি আট বছর বয়সে তিনি লাতিন ভাষায় শিক্ষা শুরু করেন এবং বার বছর বয়সে লাতিন দক্ষতা অর্জন করেন। তেরো বছর বয়সে এক সকালে তার বিদ্যালয়ের একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য তিনি ৩০০ হেক্সামিটারের একটি লাতিন ভাষায় কবিতা রচনা করেন। অতঃপর তিনি সম্পূর্ণ নিজ চেষ্টায় গ্রিক ভাষা আয়ত্ত করেন। এই সময়ে তার মানসিক উৎকর্ষ রনে দেকার্তের অনুরুপ ছিল। প্রাচীন সাহিত্যে ও শিল্প বিষয় অনুশীলনে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না, তাই তিনি ন্যায় শাস্শ্র অনুশীলনে মনোনিবেশ করেন। গীক ও ল্যাটিন পন্ডিতগন এবং দার্শনিকগন ও খৃষ্টান যাজতবৃন্দ ন্যায়শাস্শ্রকে যে পর্যায়ে এনেছিল তার সংস্কার করার প্রচেষ্টা হতেই লাইব‌নিৎসের characterstic Universalis, বা Universal Mathematis, এর বীজ অঙ্কুরিত হয় এবং এর থেকেই তিনি দর্শন শাস্ত্র ও মনস্তত্বের আস্বাদ পেয়েছিলেন।

গেয়র্গ ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ হেগেল (আগস্ট ২৭, ১৭৭০ – নভেম্বর ১৪, ১৮৩১) একজন জার্মান দার্শনিক এবং জার্মান ভাববাদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। বাস্তবতার ক্ষেত্রে তার ঐতিহাসিক ও ভাববাদী অবস্থান ইউরোপীয় দর্শনকে বিপ্লবী করে এবং মহাদেশীয় দর্শন ও মার্কসবাদের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রদূত হিসবে বিবেচিত হয়।

জগত বা সত্যের ক্ষেত্রে জ্ঞেয় ও অজ্ঞেয়'র দ্বৈত রূপ হেগেল অস্বীকার করলেও তার নিকট মূল হচ্ছে ভাব; বস্তু নয়। যা কিছু জ্ঞেয় বা দৃশ্যমান সবই হচ্ছে ভাবের প্রকাশ ও বিকাশ। এছাড়া ভাবের চরম বিকাশ জার্মান রাষ্ট্রযন্ত্রে ঘটেছে বলে হেগেলের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা পরবর্তীকালে স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রযন্ত্রের আদর্শগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পেরেছে। বস্তুত হেগেল দর্শন থেকে উত্তরকালে দুটি পরস্পরবিরোধী ধারার বিকাশ ঘটেছে; এর একটি হচ্ছে মার্কসবাদ বা দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ আর অন্যটি হচ্ছে নবভাববাদ ও স্বৈরতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতবাদ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত