থার্টি ফার্স্ট নাইটে থাকছে না কোনো অনুষ্ঠান

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৫০ |  আপডেট  : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২১

ফাইল ছবি

দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বছরের শেষ সময়ে ভ্রমণে আসেন হাজারও পর্যটক। এই পর্যটকদের বেশিরভাগই আসেন থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নতুন বছর উদযাপন করতে। তবে এবার ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে সৈকত এলাকায় গান-বাজনা বা অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

রোববারের সূর্য পশ্চিমাকাশে ডুবে গেলেই শুরু হবে নতুন বছরের সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষা। সূর্য ডোবার এ রাতেই পৃথিবীর হালখাতা থেকে স্মৃতি হবে ২০২৩ সাল নামের আরও একটি বছর। সোমবারের সূর্যের সঙ্গে শুরু হবে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের পথচলা। বিদায়-বেদনার মাঝেও ৩৬৫ দিনের সফলতা-ব্যর্থতার হিসাব পেছনে ফেলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় ৩১ ডিসেম্বর রাতে ২০২৪ সালকে স্বাগত জানিয়ে পালন করা হয় থার্টিফাস্ট নাইট। তবে কক্সবাজার সৈকত বা পর্যটন জোনের খোলা কোনো মাঠে এবারও কোনো আয়োজন নেই।

১৫ বছর ধরে চলা আসা  থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জাঁকজমক  চিত্র গত সাত বছর ধরে বন্ধ। গত নব্বই দশকের শেষ থেকে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে বেসরকারি টেলিভিশন কিংবা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি সৈকতে উন্মুক্ত বিনোদন আয়োজন করে বর্ষবরণ জমিয়েছে। তারকা হোটেলগুলো আয়োজন করতো ইনডোর প্রোগ্রাম। যেখানে বহিরাগতরাও অংশ নিতে পারতো। কিন্তু ২০১৭ সালে সঙ্গে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার আগমণ ঘটে। এরপর বাংলাদেশে পূর্ব থেকে অবস্থান করা আরও তিন-চার লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে উখিয়া-টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পে অবস্থান করানো হচ্ছে। সেই থেকে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় ২০১৭ সাল থেকে থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে সৈকত তীরে উন্মুক্ত বা বাউন্ডারি ভুক্ত অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর ২০১৯ সালে করোনার পর থেকে থার্টিফার্স্ট নাইটের সেই জমজমাট আয়োজন আর হচ্ছে না কক্সবাজারে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারও বিচে ওপেন অনুষ্ঠান বন্ধ। তবে পর্যটকরা চাইলে রাত ১-২টা পর্যন্ত বিচে ঘুরতে পারবেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে থাকবে। কিন্তু রাত দশটার পর হোটেলের সব বার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে শহরের অভ্যন্তরে যানজট কমাতেও।

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সৈকতের কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানোসহ গান-বাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ব্যান্ডসংগীতের আয়োজন করতে পারবে না কেউ। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বালুচরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করা যাবে। বিধিনিষেধ পালনে টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

কক্সবাজার জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতা রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, বেড়াতে আসা পর্যটকদের অভিযোগ কক্সবাজারে শিশুদের বিনোদন ও রাতের বেলা উপভোগ্য কিছু না থাকায় দু’একদিন পর ফিরে যেতে হয়। তবে গলফ্ মাঠে চলমান শিল্প ও বাণিজ্য মেলা রাতের পর্যটনে বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গা বিষয়টি মানবিক বিপর্যয়। এটি কক্সবাজারের সৌন্দর্য্যকে ম্লান করতে পারেনি। তাই থার্টিফাস্ট নাইটে সৈকতে উন্মুক্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা যুক্তিযুক্ত নয়। সবাই মিলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থার্টিফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা গেলে পর্যটনের বিভিন্ন সেক্টরে কয়েকশো কোটি টাকার বাণিজ্য হতো। 

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পোশাক পরিহিত পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো রোধে সন্দেহভাজনদের ব্রিথিং টেস্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট স্থাপন করে যতোটা সম্ভব চলবে তল্লাশি।

তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের অতিথিদের জন্য নববর্ষ উদ্যাপনের আয়োজন করতে পারে। সার্বক্ষণিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পর্যটন এলাকায় টহলে থাকবে।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত