তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি, কাউনিয়ায় ভেসে গেলো কৃষকের স্বপ্ন

অনেক স্বপ্ন নিয়ে তিস্তার জেগে উঠা চরে বুনেছিল বাদাম। আশা ছিল অধিক লাভের সেই স্বপ্ন আর আশা তিস্তা নদীতে হঠাত পানি বৃদ্ধিতে ভেসে গেল। চরম ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তার জেগে উঠা ১৭টি চরের বাদাম চাষিরা।

সরেজমিনে তিস্তার জেগে উঠা বিভিন্ন চর ঘুরে দেখা গেছে, কাউনিয়া হঠাৎ বৃষ্টি ও নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে আর অনেকের তুলে রাখা বাদাম ভেসে গেছে। চরের কৃষকরা বলছেন, যদি পানি দ্রæত নেমে যায়, তাহলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। তবে পানি বেশি সময় থাকলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা। আলুর ক্ষতি পুশিয়ে নিতে অনেক স্বপ্ন নিয়ে বাদাম চাষ করেছেন চাষিরা কিন্তু হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তাদের সেই স্বপ্ন ভেসে গেল আর অনেকেই বাদাম পুক্ত হওয়ার আগেই পানি থেকে বাদাম তুলছেন। কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর এমন কোন চর নেই যেই চরে বাদাম চাষ হয়নি। অধিকাংশ চরেই বাদাম তলিয়ে গেছে। পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের কৃষক সোনামিয়া জানান, ৪দোন (১০০ শতক) জমিতে বাদাম চাষ করেছেন, তার সব বাদাম ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কামলা দিয়ে চেষ্টা করছেন পানি থেকে বাদাম তুলতে কিন্তু যে পরিমান বাদাম পাবে সেই বাদামের দাম ভাল পাবে না। তাই তার খরচই উঠবে না। তার মতো শতশত কৃষকের বাদাম ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮৭০ হেক্টর। বাস্তবে চাষ হয়েছে ৮৭৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৭১ মেট্রিক টন। পানিতে বাদাম ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র অজর্ন নিয়ে সঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান তার ওয়ার্ডের গদাই, পাঞ্চরভাঙ্গা ও চরঢুসমারা গ্রামের অধিকাংশ চরের বাদাম ক্ষেত হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নটি তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় প্রতিবছরই নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। নদীতে নতুন চর জেগে উঠায় সেখানে ব্যাপক হারে বাদাম চাষ হচ্ছে। হঠাৎ নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের অনেক জমি পানিতে তলিয়ে শতশত কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানিয়া আকতার জানান, তিস্তার বিভিন্ন চরে প্রায় ১৫ হেক্টর বাদাম ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে আমরা আশাবাদী, পানি দ্রুত নেমে গেলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে না। ক্ষদিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারী ভাবে সহযোগিতা কামনা করেছেন।