ঢাকাকে চমকে দারুণ শুরু খুলনার

  স্পোর্টস ডেস্ক:

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১০:১৩ |  আপডেট  : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:০৭

দিনের প্রথম ম্যাচে যেখানে রানখরা দেখা গেছে, দ্বিতীয় ম্যাচে হলো ঠিক তার উল্টো। শুরুতে ব্যাট করে রানের পাহাড় গড়েছিল মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা।

রানবন্যা দেখা গেল খুলনা টাইগার্সের ইনিংসেও। তবে থিসারা পেরেরার শেষের ঝড় জয় তুলে নেয় খুলনা।অষ্টম বিপিএলের উদ্বোধনী দিন শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে জয় পায় খুলনা। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ৬ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় খুলনা।  

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই ওপেনার তানজিদের উইকেট হারায় খুলনা। শুভাগত হোমের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২ রান করেন তানজিদ। তবে এরপর আন্দ্রে ফ্লেচার ও রনি তালুকদার মিলে দারুণভাবে ইনিংস মেরামত করেন। দুজনের জুটিতে আসে ৭২ রান। ২৩ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে আরেক ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের বলে উইকেটকিপার মোহাম্মদ শেজজাদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ফ্লেচার।

ফ্লেচারের বিদায়ের পর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের (৬) উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা। অন্যপ্রান্তে রনি তালুকদের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে দেন। দুর্দান্ত কিছু স্ট্রোক খেলে ৩১ বলেই ফিফটি তুলে দেন তিনি। দারুণ খেলতে থাকা রনি শেষ পর্যন্ত ৪২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬১ রান করে এবাদত হোসেনের বলে আউট হন। চাপের মুখে ১৫ বলে ১৩ রান করে রাসেলের দ্বিতীয় শিকার হন ইয়াসির আলী।  

শেষ ১৬ বলে খুলনার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ রান। ক্রিজে তখন ঝড় তুলছেন থিসারা পেরেরা। শেষ পর্যন্ত এই পেরেরাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। দলের জয় নিশ্চিত করার পথে ১৮ বলে ৬ চারে ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন থিসারা। ৫ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন মেহেদী।  

এর আগে তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ শেহজাদ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রানের সংগ্রহ পায় ঢাকা। শুক্রবার বিপিএলের উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মিনিস্টার গ্রুপের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিং বেছে নেয় খুলনা টাইগার্স। দিনের প্রথম ম্যাচে রানখরা দেখা দিলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকার ব্যাটাররা মিরপুরের উইকেটকে যেন ব্যাটিং পিচ বানিয়ে দিলেন।  

ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানের ব্যাটার শেহজাদ ও বাংলাদেশের ওপেনার তামিমের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় ঢাকা। দুজনের জুটিতে আসে ৬৯ রান। মাত্র ২৭ বলে ৮ চারে ৪২ রানের ইনিংস খেলে রনি তালুকদারের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন শেহজাদ।  

ওপেনিং সঙ্গীকে হারালেও ধীরে ধীরে হাত খুলতে থাকেন শুরুতে দেখেশুনে খেলা তামিম। এরপর ৪১ নিজের ৪১তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি তুলে দেন বাঁহাতি এই ওপেনার। কিন্তু পরের ওভারের প্রথম বলেই তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে নাভিন-উল-হকের হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় তার ৪২ বলে ৭ চারে ৫০ রানের ইনিংস।বল হাতে ২টি করে উইকেট নেন রাসেল ও এবাদত। বাকি উইকেট শুভাগতর।

তামিম বিদায় নেওয়ার পর দ্রুত বিদায় নেন মোহাম্মদ নাঈম ও আন্দ্রে রাসেল। লঙ্কান পেসার থিসারা পেরেরার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন নাঈম (৯) এবং পেরেরার বলে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও অদ্ভুতভাবে রান আউট হয়ে ফেরেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার রাসেল।  পেরেরার ওভারের শেষ বলটি শর্টে ঠেলে দিয়েই এক রানের জন্য দৌড় দেন রাসেল। অপর প্রান্ত থেকে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও সাড়া দেন। এদিকে বলটি ধরে স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্পে সরাসরি থ্রো করেন তানজিদ হাসান। কিন্তু ততক্ষণে ক্রিজে পৌঁছে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। ঠিক তখনই ঘটে অদ্ভুত ঘটনা।

তানজিদের থ্রো স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে সরাসরি এসে লাগে ননস্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্পে! কিন্তু এর আগেই নিশ্চিত রান হচ্ছে ভেবে বলের দিকে না তাকিয়ে রাসেল দৌড়ের বদলে হাঁটা শুরু করে দিয়েছেন! বল যখন নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে দেয়, তার বোকার মতো তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না! ৩ বলে ৭ রান করে ফিরেন এই ক্যারিবীয় তারকা।

ছোটখাটো ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ঢাকা। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করা মাহমুদউল্লাহ শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। জহুরুল ইসলাম ১২ রান করে বিদায় নেওয়ার পর শুভাগত হোমকে নিয়ে রানের গতি বাড়ান রিয়াদ। ১৯তম ওভারে নাভিনের বলে দুটি বিশাল ছক্কা হাঁকান শুভাগত।  

এরপর রাব্বির করা শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান রিয়াদ। কিন্তু পরের বলে ফের তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন রিয়াদ। ডানদিকে ডাইভ দিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচটি ধরেন তানজিদ হাসান। শুভাগত শেষ পর্যন্ত ১২ রানে এবং ইশুরু উদানা ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

বল হাতে ৩ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৫ রান খরচ করেছেন খুলনার রাব্বি। ১ উইকেট পেয়েছেন থিসারা পেরেরা। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত