ডাকে আমায় ভূবন ডাঙ্গার মাঠ - পলক রহমান
প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ১৩:৪৩ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮
ডাকে আমায় ভূবন ডাঙ্গার মাঠ
পলক রহমান
আমি তীর্থস্থান বা মহা পুরুষদের লীলা ক্ষেত্র বুঝি না।
আমি মসুলমান হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান বুঝি না। আমি গয়া, কাশী,
বেথেলহাম, মথুরা, মক্কা-মদিনা, বারাণসী বুঝি না।
আমি শুধু বুঝি আমি বাঙ্গালী, বাংলা আমার মুখের ভাষা। গঙ্গা-পদ্মা, দামোদর, ব্রম্মপুত্রের জল কন্ঠহার জড়ানো মাটি আমার জন্মভূমি, আমার অহঙ্গারের দেশ- বাংলাদেশ।
তাই শয়নে স্বপনে জাগরণে ডাকে আমায় ভূবন ডাঙ্গার মাঠ।
আমি আরবি, ফার্শি, সংস্কৃত, পালি, ইংরেজি বুঝি না।
আমি বুঝি বাংলা, আমি চিনি বাংলা বর্ণমালা, আমি
বাঙলায় কথা বলি। বাঙালী সাংস্কৃতি নিয়ে তাই নির্দ্বীধায়
আমি চিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে, চিনি ভূবন ডাঙ্গার মাঠ,
আর চিনি আমার তীর্থ স্থান শান্তিনিকেতন।
আমি আদম(আ:) চিনি, যিশু চিনি, মোহাম্মদ (স:) চিনি, কৃষ্ণ চিনি,
বৌদ্ধ চিনি। এ সকল মহপুরুষদের মাথায় তুলে রাখি। কিন্তু তার
সাথে অসামান্য রবীন্দ্রনাথকেও তো বেশী বেশী চিনতে চাই।
কেননা সে যে বাঙ্গালী অস্তিত্বের অভিগম্য অভিধান,
বাঙালি জাতিসত্তার প্রতিচ্ছবি।
বাঙালী সংস্কৃতি ও সভ্যতার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব সন্তান।
আমি কুরআন, পুরান, বেদ, বাইবেল, ত্রিপিটক চিনি।
ভক্তির সাথে তাকে ধারণ করি হৃদয়ে। কিন্তু একটু হলেও তো
চিনি গীতাঞ্জলি। বাঙালী হিসেবে সে গীতাঞ্জলিকে আরও বেশী
বেশী চিনতে, জানতে এবং বুঝতে চাই । কেননা সে যে
এমনই এক জীবন দর্শন যা সৃষ্টি আর স্রষ্টার মাঝে প্রার্থনার
মহা সংগীত, জীবন আর মৃত্যুর সাথে প্রেম, অদৃশ্য আর অসীমের
মাঝে মধুর আলিঙ্গন একাকার।
যার তালধব্জা, দেহালী, বাঙালী দেহের ভেতর বাংলাদেশ
হোয়ে জেগে থাকে। গঙ্গা পদ্মা হোয়ে সাগর থেকে মেশে
মহা সাগরে,
যার গীতাঞ্জলী, ডাক হরকরা, সোনার তরী খোয়াই নদীর
জলতরঙ্গে অহর্নিশি ভেসে ভেসে বেজে বেজে যায়
বুকের ভেতর,
যার পঞ্চবাটি ‘উত্তরায়ন’ আর সোনাঝুরির বর্নীল কলকাকলি
মানব ও মানবতার উৎকৃষ্ট বাতাবরণ হোয়ে প্রতিনিয়ত
কাছে ডাকে অহিংস বিশ্বকে।
আমি সেই বাঙালীর সন্তান, আমি সেই বাঙলা ভাষার সন্তান,
আমার বুকের মাঝে বাংলাদেশ হোয়ে খেলা করে সিলাইদহ, দক্ষিণডিহি, জোড়াসাঁকো,
ভূবনডাঙ্গার মাঠ- শান্তি নিকেতন, সেই তো আমার, তোমার,
এই বাঙলার আর বাঙ্গালীজাতি সত্তার প্রকৃত তীর্থধাম।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত